শ্রীমঙ্গলে ভ্রাম্যমান আদালতের জব্দ...
শ্রীমঙ্গলে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে জব্দ করা ১২৩ বস্তা ভারতীয় ও নস্ট চা আজ শুক্রবার শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইস্টিটিউট ক্যাম্পাসে ধ্বংস করা...
ছবি সংগৃহীত
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরীণ সড়কের আরসিসি ঢালাই কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
রাস্তার কাজ তদারকিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের গাফলতি আছে বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। ঠিকাদারের লোকজন জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের কাজে দায়সারাভাবে কাজ শেষ করতে চাচ্ছেন। কাজের এমন ধরণ দেখে হাসপাতালের সেবা নিতে আসা রোগী ও স্থানীয় মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তারা কাজ ভালো হচ্ছে না বলে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ রয়েছে, শুরু থেকেই এই কাজে অনিয়ম করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। শিডিউল অনুযায়ী কাজের ঢালাইয়ের ঘনত্ব বেশি দেয়ার কথা থাকলেও কম করা হচ্ছে। প্রতি মিশ্রণে এক বস্তা সিমেন্ট, ৪ টুকরি (সারু বালু ২ টুকরি ও সাধারণ বালু ২ টুকরি), ৮ টুকরি কংক্রিট দেয়ার বাধ্য বাধকতা রয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল সড়কের বিভিন্ন স্থানে বালু বেশি দিয়ে দশ-এক উপকরণ মিশ্রণ করে ঢালাই করা হয়। ইতিমধ্যে বৃষ্টি দেয়ায় ঢালাই অংশের বিভিন্ন জায়গায় ইটের খোঁয়া ভেসে উঠেছে। যা আগামীতে গাড়ি চলাচল শুরু হওয়া মাত্র সড়ক দ্রুত ভেঙ্গে পড়বে।
জানা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে বর্ষা মৌসুমে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেবা গ্রহিতাদের। প্রতিবছর সামান্য বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে হাসপাতাল সড়কটি তলিয়ে যায়। এসময় যানবাহনসহ লোকজন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই সমস্যা নিরসনে স্থানীয়ভাবে কুলাউড়া ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের সহযোগিতায় গত তিন বছর ধরে চলাচলের জন্য অস্থায়ী ভাসমান প্রায় ২৫০ ফুট সাঁকো তৈরি করেন।
পরবর্তীতে কুলাউড়ার লোকজনের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের অধীনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হাসপাতালের প্রধান ফটক থেকে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ পর্যন্ত ১৩ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ব্যয়ে সড়ক মেরামত ও সংস্কার কাজ করার জন্য দরপত্র আহবান করে।
চলমান এ কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় সিলেটের শিবগঞ্জের মের্সাস রুপালী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসাপাতাল চত্বরে নির্মাণ কাজের স্থানে গিয়ে দেখা যায় বালু ও কংক্রিট বেশি দিয়ে ঠিকাদারের লোকজন ইচ্ছামাফিক কাজ করছে। বিষয়টি জানতে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের প্রকৌশলী মনিরুল হককে অবহিত করা হলে তিনি নির্মাণ কাজের অনিয়মের সত্যতা পেলেও কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে বলে দাবি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা গাড়িচালক মোশাররফ হোসেন, রুস্তুম আহমদ, রুবেল আহমদ, আহাদ মিয়া বলেন, শুরু থেকেই খুবই নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সিমেন্ট কম ও বালুর পরিমাণ বেশি দিয়ে ঢালাই দিচ্ছে।
নিম্নমানের ইটের খোঁয়া ভালোভাবে পরিস্কার না করে ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করার ফলে অনেক জায়গায় সামান্য বৃষ্টিতে কংকিটের খোঁয়া ভেসে উঠেছে। এমনকি রড বাঁধায় অনেক অনিয়ম রয়েছে। তার দিয়ে রড না বেঁধে এমনিতে রড বিছিয়ে ঢালাই করা হচ্ছে। এতে ঢালাইয়ের স্থায়ীত্ব কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ও প্রকৌশলীদের সঠিক তদারকির অভাবে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে। যার ভোগান্তি কুলাউড়ার জনগণকে পোহাতে হবে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি প্রধান মিস্ত্রী রফিক মিয়া বলেন, নিয়মমত কাজ করা হচ্ছে। ঢালাইয়ের কাজে সকল উপকরণ সঠিকভাবে দেয়া হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাকির হোসেন বলেন, কাজ শুরুর দিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইচ্ছামাফিক কাজ করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের হস্তক্ষেপে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুইজন প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে বর্তমানে কাজটি করা হচ্ছে। কাজে কোন অনিয়ম থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মৌলভীবাজার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. মনিরুল হক বলেন, সার্বক্ষণিক দুইজন প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে সঠিক তদারকির মাধ্যমে সিডিউল অনুযায়ী কাজটি করা হচ্ছে। লোকজনতো অভিযোগ করবেই। মালামাল মিশ্রণের সময় অনেক সময় মিস্ত্রি উপকরণ কমবেশি করলে কিছু ত্রুটি থাকতে পারে।
এসএ/সিলেট