সিলেটের পরিবহন মালিক শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘট স্থগিত

post-title

ছবি সংগৃহীত

সিলেটের পরিবহন মালিক শ্রমিকরা ধর্মঘট থেকে কিছটা সরে এসেছেন। অন্তত দু’দিনের জন্য তাদের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

তাদের দাবি-দাওয়াগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্ঠাদের কাছে পাঠানো হবে- এমন একটা আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সংক্ষিপ্ত পরিসরে আরও বিস্তারিত আলাপ আলোচনার জন্য তারা তাদের কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার বিকেলে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সন্ধ্যা পৌণে ৭টার দিকে এ ঘোষণা আসে।

সভায় শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের দাবি-দাওয়ার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় তারা সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর ৩৬ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতা বলে সরকার বাস মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০, ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যানের ক্ষেত্রে ১৫ ও সিএনজি ইমা ও লেগুনার ক্ষেত্রে ১৫ বছর ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করার প্রজ্ঞাপন বাতিল, সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল এবং পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, বিআরটিএ কর্তৃক গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের ছাড়পত্র বাতিল ও গণপরিবহণের উপর আরোপিত বর্ধিত ট্যাক্স প্রত্যাহার, সিলেটের সব  ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ, বিদ্যুতের মিটার ফেরত ও ভাংচুরকৃত মিলের ক্ষতিপূরণ এবং গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর বালুর ক্ষতিপূরণ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহার এবং বালু পাথরসহ পণ্যবাহি গাড়ির চালকদের হয়রানি না করার জোরালো দাবি জানান।

সবার দাবি দাওয়ার কথা গুরুত্বসহকারে শোনেন বিভাগীয় কমিশনার এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা। এরপর বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী বলেন, মানুষের জন্য আইন মানুষের জন্যই সবকিছু। মানুষ ছাড়া কোনো পরিবেশ নেই। সুতরাং আমরা সিলেটবাসীর কল্যাণে সবটুকু আমরা করবো।

তিনি বলেন সারাদেশে যদি পাথর উত্তোলন করা যায় তাহলে সিলেটে কেন উত্তোলন করা যাবেনা? আমরা সবগুলো সিদ্ধান্ত রিভিউ করবো। প্রয়োজনে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালতও আছেন। সরকার মানুষের জন্য। মানুষ না থাকলে সরকার থেকে কি হবে বা সরকার কার জন্য থাকবে? তিনি পাথর সংশ্লিষ্ট মালিক শ্রমিক ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ এবং সিলেট জেলা পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দকে আশ্বাস দেন যে, তাদের সব দাবি-দাওয়া নিয়ে আগামী দুইদিন পর আবার ছোটো পরিসরে বসে বিস্তারিত আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত হবে।

এদিকে,  সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস- মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দু’দিনের জন্য আমরা কর্মবিরতি স্থগিত করেছি। কমিশনার সাহেব আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। তিনি দু’দিন সময় চেয়েছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা শেষে আবার আমরা সংক্ষিপ্ত পরিসরে বৈঠকে বসবো। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। আপাতত আমাদের কর্মসূচি স্থগিত। সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবীর আহ্বানে চলমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন মালিক শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে এই বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলামসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।

এসএ/সিলেট