আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শাবির এফইটি বিভাগের উদ্ভাবনী চা প্রদর্শনী

post-title

ছবি সংগৃহীত

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি)  প্রযুক্তি গবেষণা, উদ্ভাবন ও শিক্ষা বিষয়ক তিন দিনব্যাপী অষ্টম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নিজেদের উদ্ভাবনী চা প্রদর্শন করছেন ফুড ইন্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি (এফইটি) বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে চলছে এই প্রদর্শনী। এবারের সম্মেলনের বিশেষ আকর্ষণ ‘ইনোভেশন রিসার্চ’ শিরোনামের নতুন একটি সেশন, যেখানে অংশগ্রহণ করে অনুষদের অধীনস্থ নয়টি বিভাগ। প্রত্যেক বিভাগের গবেষণালব্ধ পণ্যের বাস্তব রূপ এবং উদ্ভাবনী কার্যক্রম প্রদর্শনের জন্য স্থাপন করা হয় পৃথক পৃথক বুথ। এর মধ্যে এফইটি বিভাগের বুথটি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়ে নেয় উদ্ভাবনী ও বৈচিত্র্যময় চা উপস্থাপনার জন্য।

বিভাগের পক্ষ থেকে প্রদর্শিত হয় একাধিক বৈজ্ঞানিক পণ্য, যার মধ্যে অন্যতম ছিল স্পাইসি টি, ফ্লেভার টি, এবং সম্পূর্ণ নতুন ধারণা ভিত্তিক কার্বোনেটেড টি বেভারেজ। স্পাইসি ও ফ্লেভার টি-তে ব্ল্যাক টির সঙ্গে নির্দিষ্ট অনুপাতে ভিন্নধর্মী উপাদান যেমন তুলসী, আদা, এলাচ প্রভৃতি মিশ্রণ করা হয়েছে, যা স্বাদ ও স্বাস্থ্যগুণে সমৃদ্ধ। এই পণ্যগুলো বানানোর সময় প্রতিটি উপাদানের মাত্রা নির্ধারিত হয়েছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। অন্যদিকে চায়ের কোমল পানীয়ে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তৈরি করা হয়েছে কার্বোনেটেড টি বেভারেজ। এটি দেশের বাজারে একটি অনন্য আইডিয়া হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করছেন বিভাগের গবেষকরা।

এছাড়াও, প্রদর্শনীতে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অন্যান্য পণ্যার মধ্যে মরিঙ্গা এনরিচড বিস্কুট, টমেটো পাউডার, এবং পরিবেশবান্ধব ন্যানোকম্পোজিট বায়োডিগ্রেডেবল ফুড প্যাকেজিং ফিল্ম বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।

এই প্রদর্শনীতে উপস্থিত থেকে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক ড. ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান বাজারে অনেক ধরনের চা পাওয়া গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপাদানের প্রকৃত অনুপাত, মান ও কার্যকারিতা সঠিকভাবে উল্লেখ করা থাকে না। আমাদের গবেষণালব্ধ চায়ের পণ্যে প্রতিটি উপাদান সুনির্দিষ্ট অনুপাতে ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে স্বাদ ও স্বাস্থ্যগুণে রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য। শুধু স্বাদের জন্য নয়, বরং বৈজ্ঞানিকভাবে উপকারিতা নিশ্চিত করেই আমরা এগুলো তৈরি করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমাদের বিভাগের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফল, যার মাধ্যমে আমরা নতুন উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকদের জন্য পথ খুলে দিচ্ছি।’

এসব উদ্ভাবন নিয়ে এফইটি বিভাগের প্রধান ড. মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা শুধু গবেষণা করতে আগ্রহী নই, বরং সেই গবেষণাকে বাস্তব পণ্যে রূপ দিয়ে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে কাজ করছি।’ তিনি জানান, তাদের তৈরি প্যাকেজিং ফিল্ম বিভিন্ন বায়োপলিমার ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে যা পরিবেশে দ্রুত বায়োডিগ্রেড হয়ে যায়। এ ধরনের ইনোভেশন খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশ সংরক্ষণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

এসএ/সিলেট