জলাবদ্ধতায় নাখাল হবিগঞ্জবাসীকে...
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন, অপরাপর সরকারের মতো বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও খোয়াই নদী সংরক্ষণে নানা প্রকল্প...
ছবি সংগৃহীত
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ইউনাইটেড হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সংঘবদ্ধ হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে ২৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুল আলম সুমন বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় এ মামলা (১৫(০৭)২০২৫) দায়ের করেন। মামলায় ৩৯ জনের নাম উল্লেখ আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
মামলার আসামীরা হলেন- নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের মৃত কবির চৌধুরী ছেলে ছাবির আহমদ চৌধুরী, তিমিরপুর গ্রামের মৃত রমিজ উল্লার ছেলে মো. আলাউদ্দিন মিয়া), চরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে মিজানুর রহমান চৌধুরী নিলু, পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে ভুটু মেম্বার, মৃত নজির মিয়া (নুরাই) ছেলে নুরুজ্জামান, পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের রুবেল, চরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল কাদির লেচু মিয়ার ছেলে শেখ আবুল কাশেম, লিটন মিয়ার ছেলে আহমেদ জনি, কবির মিয়ার ছেলে শেখ শিপন মিয়া, শেখ আলাই মিয়ার ছেলে শেখ আল-আমীন, মৃত ফিরোজ মিয়া চৌধুরীর ছেলে রাব্বি আহমেদ চৌধুরী মাকু, মৃত শেখ গফুর মিয়ার ছেলে শেখ আজিজুল, মৃত রহমত ঠাকুরের ছেলে আহমদ ঠাকুর রানা, দরবেশপুর গ্রামের দুদু মিয়া, চরগাঁও গ্রামের শেখ ইজ্জত মিয়ার ছেলে শেখ সামছুল ইসলাম, পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের জলফু মিয়া তালুকদারের ছেলে সেলিম মিয়া তালুকদার, সেলিম মিয়া তালুকদারের ছেলে জাবেদ ইকবাল তালুকদার, চরগাঁও গ্রামের মোঃ মুকিত উরফে লাল মুকিতের ছেলে রিংকু, পিংকু, মৃত আফজল মিয়ার ছেলে মো. মুকিত উরফে লাল মুকিত, ইছরাইল মিয়ার ছেলে শিপন মিয়া, পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামের লোকমান মিয়ার ছেলে এনাম মেম্বার, পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের ইজাজ মিয়ার ছেলে আলমগীর, চরগাঁও গ্রামের শেখ কায়েছ আহমদ, কবির মিয়ার ছেলে শেখ মিটু , পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে মতিন মিয়া, জাহাঙ্গীর, পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের মৃত আকলিছ মিয়ার ছেলে ওয়াহিদ, তিমিরপুর গ্রামের রমিজ উল্লার ছেলে আব্দুল্লাহ, তাজ উদ্দিন, পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে শুভ, মৃত দিলাওয়ারের ছেলে রিংকু, চরগাঁও গ্রামের ছালিক মিয়া চৌধুরীর ছেলে মিজানুর রহমান চৌধুরী মিতু, তিমিরপুর গ্রামের মৃত রমিজ উল্লার ছেলে তাজন, পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে আব্দুল জলিল, পশ্চিম তিমিরপুর গ্রামের আশিক, পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের মনজিল, মতলিব মিয়ার ছেলে তুহিন, আষ্টব উল্ল্যার ছেলে কয়েছ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, তিমিরপুর ও আনমুনু গ্রামের দুই সাংবাদিকের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ৭ জুলাই বিকেলে তিমিরপুর স্কুল মাঠে এক সালিশ বৈঠকে প্রধান আসামি ছাবির আহমদ চৌধুরীর উসকানিমূলক বক্তব্যের পর উত্তেজনা আরও বাড়ে এবং বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সংঘর্ষে রূপ নেয়।
হাসপাতাল মালিক মাহবুবুল আলম সুমনের অভিযোগ, প্রধান আসামি ছাবির আহমদ চৌধুরীর নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা সংঘবদ্ধভাবে সংঘর্ষের সুযোগে দেশীয় অস্ত্রসহ হাসপাতালের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। তারা এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি মেশিন, অপারেশন থিয়েটার, রোগী কেবিন, ওয়ার্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জাম ধ্বংস করে।
এছাড়াও হাসপাতালের কাউন্টার থেকে প্রায় এক লাখ পঁয়ষট্টি হাজার টাকা, রোগীদের রিপোর্ট, অনুমতিপত্র এবং মূল্যবান অফিসিয়াল কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায়। ছাদের উপরে থাকা ১৭টি এসির আউটডোর কুপিয়ে ধ্বংস করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এই চার ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডবে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হামলার সময় রোগী, নার্স এবং কর্মীরা আতঙ্কে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহের কাজ করছে।
এসএ/সিলেট