শান্তিগঞ্জে চলন্ত সিএনজি থেকে পড়ে...
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জে এক কিশোরী চলন্ত সিএনজিতে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে...
ছবি সংগৃহিত
ছাতক সংবাদদাতা:: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের সরকারি হাদা টিলা রক্ষায় কর্তৃপক্ষের অবহেলায় চলছে বালু-পাথর ও গাছপালা লুটপাটের মহোৎসব। বন বিভাগের ৭৬০ একর সংরক্ষিত বনভূমি ও টিলা দীর্ঘদিন ধরেই প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের কবলে। মাঝে মাঝে প্রশাসনের অভিযান হলেও মূল হোতারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ থেমে নেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন দেড় শতাধিক শ্রমিক লাগিয়ে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত টিলা কেটে উত্তোলন করা হচ্ছে ৫-৬শ ঘনফুট পাথর, যা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। টিলার গাছপালাও নির্বিচারে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে বনজ ও ফলজ গাছের সামাজিক বনায়ন প্রকল্প এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
অভিযোগ রয়েছে, বন বিভাগের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীরা বিষয়টি জানলেও কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। প্রশাসনের অভিযানে ড্রেজার ও নৌকা জব্দ হলেও প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নেতাদের ধরা যাচ্ছে না। ফলে অভিযান শেষে আবারও শুরু হয় অবৈধ উত্তোলন।
২০০৬-০৭ অর্থবছরে হাদা টিলায় বন বিভাগের উদ্যোগে প্রায় ১৭৫ একর জমিতে বনায়ন প্রকল্প গড়ে তোলা হয়। কিন্তু পাথর উত্তোলন আর টিলা কাটার ফলে অনেক জায়গায় জমি সমতল হয়ে যাচ্ছে, হারাচ্ছে উর্বরতা। এতে ফসলি জমি বালুমাটির নিচে চাপা পড়ে কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামীণ সড়কও।
পরিবেশবিদরা সতর্ক করেছেন, এভাবে টিলা ধ্বংস চলতে থাকলে পুরো অঞ্চলের ইকোসিস্টেম ভেঙে পড়বে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল নষ্ট হয়ে পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেবে। স্থানীয় কৃষকরাও অভিযোগ করেছেন, আবাদি জমি দিন দিন চাষের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে।
বন বিভাগের কর্মকর্তা আইয়ুব আলী অবৈধ কর্মকাণ্ডের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “সিন্ডিকেট এত শক্তিশালী যে স্থানীয় পর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও টেকসই ব্যবস্থা নিতে পারছে না।” উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মূল চক্রকে ধরতে উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ জরুরি।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, “হাদা টিলায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, তা শুধু একটি বনায়ন প্রকল্পের ক্ষতি নয়—এটি পুরো অঞ্চলের পরিবেশ, কৃষি ও অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়াবহ খেসারত দিতে হবে।”
স্থানীয়দের মতে, হাদা টিলা রক্ষায় কেবল ভ্রাম্যমাণ আদালত যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, কঠোর নজরদারি, প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা এবং সামাজিক বনায়ন প্রকল্প পুনরুদ্ধারসহ বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ।
এসএ/সিলেট