রহস্যজনক কারণে রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়ায়...
সিলেট নগরের জিন্দাবাজারে শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়া পরিচালনা কমিটির সাধারণ সভায় হামলাকারী রাহুল ও তার ভাই শান্তকে দ্রæত গ্রেপ্তারের দাবি ওঠেছে।...
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ
ছবি সংগৃহিত
সিলেট নগরের জিন্দাবাজারে শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়া পরিচালনা কমিটির সাধারণ সভায় হামলাকারী রাহুল ও তার ভাই শান্তকে দ্রæত গ্রেপ্তারের দাবি ওঠেছে। শনিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ। তারা বলেছেন, রহস্যজনক কারণে এই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
নগরের জিন্দাবাজার এলাকার একটি হোটেলের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার না করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নেতারা। তাছাড়া তাদের কারণে আখড়া পরিচালনা কমিটি ও ভাড়াটিয়ারা নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আখড়া পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জ্ঞানেন্দ্র ধর রুমু।
তিনি জানান, গত ১ নভেম্বর সকাল ১১টায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিশিষ্টজনদের নিয়ে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলাকালে সন্ত্রাসী জিতেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ ও তার পরিবারের সদস্যরা অন্যান্য সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা চালান। হামলায় দুইজন আহত হন। তারা মন্দিরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক দলিল ও কাগজপত্র নিয়ে যায়।
এমন পরিস্থিতেও উপস্থিত সবার সম্মতিতে কমিটি গঠন করা হয়। এতে সভাপতি করা হয় শিবব্রত ভৌমিক চন্দন ও সাধারণ সম্পাদক হন জ্ঞানেন্দ্র ধর রুমু। পরে সিসিক’র সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় কমিটি সভাপতি শিবব্রত ভৌমিক বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন (নং ৫০৭/২০২৫)। এই ঘটনায় জিতেন ও তার ভাইকে গ্রেপ্তার করা হলেও জিতেনের ছেলে রাহুল ও শান্ত দেবনাথকে রহস্যজনক কারণে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা কমিটির নেতৃবৃন্দসহ মন্দিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের হুমকি ধমকি দিয়েই যাচ্ছে।
রুমু জানান, রাধাগোবিন্দ জিউর আখড়ার সম্পদ আত্মসাত নিয়ে পরিচালনা কমিটির সঙ্গে জড়িতদের নামে মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় (কোতোয়ালী সিআর মামলা নং ৮৫১/২০২৩) মিথ্যা বানোয়াট ও মানহানিকর তথ্য উপস্থাপন করেছেন যার সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই।
তিনি প্রতিটি অভিযোগ ও তার বিস্তারিত জবাব তুলে ধরে জানান, জিতেন্দ্র নাথের বাবা যোগেশচন্দ্র নাথ জাল কাগজ সৃষ্টি করে এই আখড়া পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে স্বত্ত¡ মোকদ্দমা করেছিলেন ২০০১ সালে (নং ২৫৯/২০০১)। এর বিপরীতে তাকে উচ্ছেদের জন্যও মন্দির পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছিল (নং ৫৫৯/২০০৫)। যোগেশের মামলাটি ডিসমিস হলেও আখড়ার মামলায় তাকে উচ্ছেদের ডিক্রি জারি হয়। যোগেশ ডিসমিস আদেশের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে আপিল করলেও ২০২১ সালে তাও ডিসমিস হয়ে যায়। যোগেশের ছেলে জিতেন ও তার সন্তান এবং স্বজনরা মামলায় হেরে আক্রোশে মিথ্যা অভিযোগে সাজানো মামলার আশ্রয় নিয়েছেন। এমনকি যোগেশের ভাই চিত্তরঞ্জন নাথের দায়ের করা মামলাও ডিসমিস হয়েছিল। তবে এখনো কয়েকটি মামলা বিচারাধীন। তারা আখড়ার নালিশা ভ‚মি ভাড়া দিয়ে টাকা আত্মসাত করছেন।
তিনি জানান, আখড়া পরিচালনা কমিটির সদস্যরা সিলেটের বিভিন্ন মন্দির, সামাজিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের নামে অপবাদ দিয়ে আর বিভিন্ন ব্যক্তির আম-মোক্তার হয়ে মিথ্যা অভিযোগে আখড়ার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জিতেন, তার ছেলে রাহুলসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মন্দির পরিচালনা কমিটিকে হয়রানি ও নির্যাতন চালিযে যাচ্ছেন। এমনকি ভাড়াটিয়াদেরও তারা নির্যাতন করছেন। মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করায় রাহুলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি।
তাদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে তিনি সিলেটবাসীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহŸান জানান।
এসএ/সিলেট