এখনও জোট হয়নি, বিএনপির প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে

post-title

‘নির্বাচনমুখী জোট হলে কেন্দ্র থেকে জানানো হবে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। আর দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নের তালিকা চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। উপযুক্ত সময়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ঘোষণা করবেন।’  এমন তথ্য জানালেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী।

এদিকে, দলের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই মনোনয়ন প্রত্যাশী, নেতাকর্মী ও সমর্থকদের। গত এক মাস ধরে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করলেও সোমবার বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান অফিসে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাথে দলের হাইকমান্ডের বৈঠকের পর সেই উৎসাহ ও আগ্রহ অনেকগুণ বেড়ে গেছে। আবার অনেকের ভিতরে তালিকা থেকে বাদ পড়ার শঙ্কাও কাজ করছে।

দলীয় সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকা এখন অনেকটা ছোট হয়েছে, তারপরও কয়েকটি আসনের প্রার্থী চূড়ান্তকরণ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। সিলেটের অধিকাংশ আসনে একাধিক হেভিওয়েট ও মাঠের পরীক্ষিত নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় এ জটিলতা তৈরী হয়েছে।

বিভাগের ১৯ সংসদীয় আসনের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত সিলেট-১ ও ৫। সিলেট-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী দুজন। দুজনই আবার বড় নেতা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। তারা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।

সিলেট-২ আসন বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর আসন বলেই পরিচিত। ইলিয়াসের স্ত্রী তাহসিনা রুশদী লুনা এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। ইলিয়াস আলী নিখোঁজ হওয়ার পরে তিনি এ অঞ্চলে বিএনপির হাল ধরেছেন। তবে সম্প্রতি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত যুক্তরাজ্য বিএনপির শীর্ষনেতা হুমায়ুন কবিরও এ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছিলেন। তবে এখন মাঠে তেমন তৎপরতা নেই।

সিলেট-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এমএ মালেক, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এমএ সালাম, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। এরা তিনজনই প্রভারশালী নেতা। এছাড়াও এ আসনে সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমএ হকের ছেলে ব্যারিস্টার রিয়াসাদ আজিম আদনান ও যুক্তরাজ্য বিএনপি নেতা ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিনও মনোনয়ন প্রত্যাশী।

সিলেট-৪ আসনে প্রথমদিকে সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রাথীতার গুঞ্জন উঠলেও তিনি ওই আসনে নির্বাচনে রাজি হননি বলে জানা গেছে। ফলে তার ঘনিষ্ট কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীর নাম ওঠে এসেছে জোরালোভাবে। তবে ভোটের বাজারে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাকিম চৌধুরী এখানে বড় ফ্যাক্টর। এছাড়াও মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, বিএনপি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়া অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামান, সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিমের সহধর্মিনী অ্যাডভোকেট জেবুন্নাহার সেলিম এবং ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান সেলিম মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী শামসুজ্জামান জামান মঙ্গলবার গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরে জনসভা করেন। এর আগে সোমবার সিলেট নগরীতে মোটরসাইকেল মহড়া হয় তার পক্ষে।

সিলেট-৫ আসন হলো সিলেটর আলোচতি একটি আসন। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন যুদ্ধে মাঠে আছেন সিলেট জেলা বিএনপির প্রথম সহ সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক নেতা মামুনুর রশীদ মামুন (চাকসু মামনু)। বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ায় নেতাকর্মীর কাছে তার ব্যাপক গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। এছাড়াও  কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মাহবুবুল হক চৌধুরী ও সংযুক্ত আরব আমিরাত বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন মনোনয়নের দৌড়ে রয়েছেন।

সিলেট-৬ আসনে কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কাহের শামীম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমেদ চৌধুরী, সাবেক এমপি ড. সৈয়দ মকবুল হোসেনের মেয়ে সৈয়দা আদিবা হোসেন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবিনা খান পপি ও চিত্রনায়ক হেলাল খান মাঠে রয়েছেন।



কাওছার আহমদ