সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দিঘীরপার পূর্ব ইউনিয়নে একটি সরকারি খালের পাড়ের রাস্তা নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।এতে উভয় পক্ষ থানা ও আদালতে পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছেন। বিষয়টি মীমাংসা না হওয়ায় এলাকায় কোন্দল চলছে।
ভুক্তভোগী ছাদিকুর রহমান খানের মামালার এজহার ও স্থানীয় সূত্র জানায়,কানাইঘাট উপজেলার দিঘীরপার পূর্ব ইউনিয়নের সিলেট জকিগঞ্জ সড়ক হতে সর্দারমাটি মৌজা দিয়ে একটি সরকারি খাল রয়েছে। উক্ত খালের পাড়ে সিএমবি সড়ক সংলগ্ন দিঘীরপার গ্রামের মৃত আজিজুর রহমান চৌধুরীর ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী (৫৩) এর মালিকানা কৃষি জমি রয়েছে। এই সুযোগে আনোয়ারুল ইসলাম সরকারি খালের পাড় ভোগ দখলে নিতে নানা পায়তারা শুরু করেন। খালের পাড়ে টানানো দিঘীরপার কিন্ডারগার্টেন এর সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলে পাড় কেটে ফেলেন। এতে শিক্ষার্থী সহ জনগন চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টি হয়।এ বিষয়টি সমাধানের জন্য দিঘীরপার কিন্ডারগার্টেনের প্রতিষ্ঠাতা একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম খান এর ছেলে ছাদিকুর রহমান খান স্থানীয় শালিশ ব্যাক্তিবর্গের স্মরণাপন্ন হন। তাতে কোন সুরাহা না পেয়ে সরকারি খালের পাড় কেটে চলাচলে বাধা সৃষ্টি উল্লেখ করে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে গত ০৩/০৮/২৫ ইং তারিখে আনোয়ারুল ইসলাম গংদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাঁর মনোনীত তফসিলদার দিয়ে সরেজমিন তদন্তে ঘটনার সত্যতা পান। এ বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে আনোয়ারুল ইসলাম মরিয়া হয়ে উঠেন। স্থানীয় এক মুরব্বি মাপঝোঁক করে সত্যতা পাওয়া যাবে বলার কারণে গত ১৭ আগস্ট ঐ মুরব্বির বাড়িতে হামলা চালিয়ে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।
যাতে ভয়ে আর কেউ মুখ না খুলে।আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী আদালতে খালের পাড়ের উপর নিষেধাজ্ঞা মামলা দায়ের করে নিজেই খালের পাড়ে কলাগাছ রোপন করে বেড়া দিয়ে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর গত ২৭ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার বেড়া তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিলেও আনোয়ারুল ইসলাম কর্ণপাত না করে মিথ্যা অপপ্রচার লিপ্ত হন। ছাদিকুর রাহমানের আর্থিক ও সমাজিক ভাবে সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য।
ছাদিকুর রহমান অভিযোগ করেন, গত ১১/০৯/ ২৫ ইং তারিখে ফজরের নামাজের পূর্বে আগ থেকে ওৎ পেতে থাকা আনোয়ারুল হক গংরা ছাদিকুর রহমানের উপর অর্তকিত হামলা করে রাস্তায় ফেলে চলে যান। পরে নিজেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বলে অপপ্রচার চালাতে শুরু করেন। সুস্থ হওয়ার পর এ ঘটনায় ছাদিকুর রহমান খান সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ৩য় ও ৫ নং আমলী আদালতে গত ১৯/১০/২০২৫ ইং তারিখে ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জনের নাম উল্লেখ করে নন এফআইআর মামলা দায়ের করেন।মামলা নং ৩৬৩/২৫ইং। মামলার বিষয় জানার পর আইনের চোখে ধুলো ছিটিয়ে তদন্তে ধূম্রজাল সৃষ্টির লক্ষ্যে আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে যুবদল নেতা মাতাব উদ্দিন চৌধুরী স্থানীয় কিছু সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মীকে ভুল বুঝিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে প্রতিবাদ সভা নাম করে সম্মানহানির জন্য মনগড়া বক্তব্য প্রচার করেন। এ বিষয়ে ছাদিকুর রহমান খান জানান,আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে চায়না। একাধিক বার স্থানীয় মুরব্বিয়ান বিষয়টি মিমাংসার উদ্যোগ নিলে আনোয়ারুল ইসলাম প্রথমে রাজী হয়ে কাল ক্ষেপণ করে আদালতে গিয়ে আবার মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।আনোয়ারুল ইসলামের এহেন নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে তিনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনিসহ সকলের প্রতি আকুল আবেদন জানান।
এদিকে আনোয়ারুল ইসলাম এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এব্যাপারে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জেলায় একটি মিটিংয়ে আছেন, পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।