রথযাত্রা উৎসব শেষে সিলেটে ইসকনের...
সনাতন ধর্মের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব রথযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা শেষে, ভক্তি, সৌহার্দ্য ও স্মৃতিচারণের আবহে ইসকন সিলেট আয়োজন করে এক আন্তরিক পুনর্মিলনী...
সিলেট প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন
ছবি সংগৃহীত
দক্ষিণ সুরমার কদমতলীস্থ মোমিনখলায় ৮৪ শতক জায়গার দখল নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন মৃত আফরোজ বক্তের স্ত্রী সুনারা বেগম। তাদের অপরাধ ঢাকতে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছেন।
বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নগরীর মদিনা মার্কেটের বাসিন্দা মো. আব্দুল মনির।
লিখিত বক্তব্যে মনির জানান, তার মামী সুনারা বেগম সংবাদ সম্মেলন করে ওই ৮৪ শতক জায়গা তার শ্বশুরের ক্রয়কৃত বলে যে তথ্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ অসত্য। তিনি জানান, কদমতলী এলাকায় ১০৯৯, ১১০০ ও ১১০১ নং দাগে সর্বমোট ১১৮ শতক ভ‚মি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ শতক জায়গা তার পিতা মরহুম হাজী মাহমুদ আলী মৌরসি সূত্রে পেয়েছেন। বাকি ৬৮ শতক জায়গার মধ্যে ১৯৫৩ সালে জায়গার মালিক আবদুর রহিমের কাছ থেকে ৩৪ শতক সুনারা বেগমের শ্বশুর মরহুম জহির বক্ত এবং বাকি ৩৪ শতক জায়গা চান মিয়া ক্রয় করেন। মোমিনখলা মৌজার এসএ ৫৯৮নং খতিয়ানের ১০৯৯নং দাগের এসএ মালিক চান মিয়া, আব্দুর রউফ গং থেকে ৪৫৮২/৫৬ দলিলে তার পিতা হাজী মাহমুদ আলীর ক্রয়কৃত সম্পদ। এই দাগের বর্তমান রেকর্ড ভুল দেখিয়ে আওয়ামী প্রভাব খাটিয়ে বর্তমান পর্চা নিয়ে যায় টিপু বক্ত। যার বিরুদ্ধে ২৫০/২৫ নং এল.এস.টি রেকর্ড সংশোধনের জন্য মামলা করেছেন তারা।
তিনি আরো জানান, মোমিনখলা মৌজার এসএডিপি ৭৮/৮, এসএস নং-৪৫৮ খতিয়ানের এসএস দাগ নং-১১০০, ১১০১ নং দাগের ৫০ শতক ভ‚মির মালিক তার পিতা মরহুম হাজী মাহমুদ আলী। যার প্রেক্ষিতে বর্তমান প্রিন্ট পর্চায় তারা ১০ ভাই-বোনের নাম রয়েছে। যার আরএস খতিয়ান নং-১০৭২, হাল দাগ ১৪১৬ ও ১৪১৭। ওই খতিয়ানের মন্তব্য কলামে টিপু বক্ত গংকে অবৈধ জোর দখলদার হিসাবে লিপিবদ্ধ করা হয়।
পরবর্তীতে ওই জায়গায় মার্কেট ও দোকানপাটসহ নানা স্থাপনা গড়ে তুলেছেন তারা। আত্মীয়তার সূত্রে তাদের অংশের মার্কেট ও দোকানপাট দেখভাল করতেন তার মামা আফরোজ বক্ত ও তার ভাই-ভাতিজারা। ওই সময় তারা নিয়মিত ভাড়া প্রদান করতেন। ১৯৯০ সালে আফরোজ বক্তের মৃত্যুর পর তার ভাই-ভাতিজারা এসব দেখাশুনা করতেন। কিন্তু ২০০০ সালের দিকে তাদের মধ্যে লোভ দেখা দেয়ায় তারা পুরো ৮৪ শতক জায়গা ও এর স্থাপনা দখল পাঁয়তারা শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা ভাড়ার টাকা-পয়সা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এই অন্যায়ের ক্ষেত্রে কাজ করেন টিপু বক্তের চাচাতো ভাই মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হেলাল বক্ত। মনির জানান, তারা সবাই নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিগত সরকারের সময়ে দাপট দেখিয়ে অন্যায়ভাবে তাদের জায়গা ও মার্কেট জবরদখল করে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, জায়গা ও মার্কেট উদ্ধারে ২০১৪ সালে তারা উচ্ছেদ মামলা দায়ের করেন। কিন্তু টিপু বক্তের ভাই হেলাল বক্ত আওয়ামী দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনিক কোনো পদক্ষেপ নিতে দেয়নি। ৫ আগস্ট পরে আওয়ামী লীগের দৌরাত্ম্য কমলে তারা বিষয়টি কদমতলী পঞ্চায়েত কমিটিকে অবগত করেন। পঞ্চায়েত কমিটির পরামর্শে তারা সেনাবাহিনীর ফেঞ্চুগঞ্জ ক্যাম্পে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। সেনাবাহিনী দু’পক্ষের কাগজপত্র দেখে গত ২৭ মার্চ টিপু বক্তকে স্বত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু ২৭ মার্চ সকাল থেকে নির্ধারিত জায়গায় তারা অবস্থান করলেও তাজুল ইসলাম টিপু তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর সেনা ক্যাম্পকে বিষয়টি অবগত করলে ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ ওইদিন টিপুকে তার বাসস্থান থেকে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ঐদিন টিপু বক্তের চাচা কাইয়ুম বক্তসহ এলাকার মুরুব্বীরা মিলে মুচলেখা দেয়ার প্রেক্ষিতে ২৮ মার্চ টিপু ও তার চাচাত ভাই হেলাল বক্তসহ উকিল সার্ভেয়ার উপস্থিত হয়ে তাদের ৮৪ শতক ভ‚মি সমজিয়ে দেয়। এ সময় একটি হস্তান্তর চুক্তিপত্র হয়। এতে হেলাল বক্ত গং স্বাক্ষর করলেও টিপু বক্ত গং স্বাক্ষর করেননি। আব্দুল মনির আরো জানান, গত ২৪ জুন খবর পান তাদের মার্কেটের মাহমুদ কমপ্লেক্স ২ এর সাইন বোর্ড অবৈধ দখলবাজরা খুলে ফেলেছে। খবর পেয়ে তিনি তার ভাই, ভাগনা সিলেট মহানগর বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি বেলাল আহমদসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। এসময় টিপু বক্ত এবং দক্ষিণ সুরমার সন্ত্রাসী মেহেদী হাসান সাজাইসহ শতাধিক গুন্ডা তাদের মার্কেট দখল করতে হামলা ও ভাংচুর চালায়। হামলায় তার ভাগনা জীবন রক্ষার্থে পার্শ্ববর্তী মসজিদে অবস্থান নিলেও সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়। ভাগনার বন্ধু ফয়জুল হক লখনকে তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। এতে তারা ৬ জন আহত হন। হামলাকারীরা তাদের দুটি মোটর সাইকেল নিয়ে যায়। তারা তাৎক্ষনিক বিষয়টি সেনাবাহিনীকে অবগত করলে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার আগেই সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ প্রশাসন তাদের সহযোগিতা করছে করছে না বলে অভিযোগ করেন।
এসএ/সিলেট