সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

দক্ষিণ সুরমার মোমিন খলায় ৮৪ শতক জায়গা দখলের অপচেষ্টা

post-title

ছবি সংগৃহীত

দক্ষিণ সুরমার মোমিন খলায় ৮৪ শতক জায়গা দখলের অপচেষ্টা চলছে। রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে এ জায়গা দখলের পায়তারা করছেন নগরীর নবাব রোডের মৃত আবদুল গফফারের ছেলে মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি বেলাল আহমদ।

সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন কদমতলী এলাকার বাসিন্দা মরহুম অফরোজ বক্সের স্ত্রী মোছা. সুনারা বেগম।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, মোমিনখলা মৌজার এসএ জেএল নং-১১১ ও বিএস জেএল নং-৭৮, এসএ খতিয়ান নং-৫৯৮, বিএস খতিয়ান নং-৪৭৪, এসএ দাগ নং-১০৯৯, বিএস দাগ নং-১৪১৭ ও ১৪১৬, মোয়াজী ০.২২১৮ একর ভ‚মি তার শশুর মরহুম জহির বক্স এই জায়গার প্রকৃত মালিক আব্দুর রহিমের কাছ থেকে ১৯৫৩ সালে ক্রয় করেন।

পরে তিনি এই সম্পত্তির স্বত্ববান থাকা অবস্থায় তার ছেলে আফরোজ বক্স ও অন্যান্য উত্তরাধিকারীগণকে রেখে মারা যান। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে তার স্বামী আফরোজ বক্স মারা যাবার পর ছেলে ও দুই মেয়ে ভোগদখলকৃত এই ভ‚মিতে মার্কেট ও বাড়ীঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। ২০০০ সালে তার ছেলে তাজুল ইসলাম টিপু বক্স তার বাবা আফরোজ বক্সের নামে একটি মার্কেট নির্মাণ করে। এ্ই মার্কেট থেকে প্রতি মাসে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ভাড়া তুলে তার ছেলে মার্কেটের বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, সিসিকের হোল্ডিং টেক্স পরিশোধ করে আসছে।

তিনি অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্টের পর মহানগর যুবদলের সহসভাপতি বেলাল আহমদ দলীয় পরিচয়ে তাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করেছেন। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তার ছেলে তাজুল ইসলাম টিপুকে গত ২৭ মার্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ধরিয়ে নেওয়া হয়। টিপুকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ ট্যাগ দেয়া হয়। অথচ, তার ছেলে এক সময়ে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল ও বর্তমানে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নির্বাহী সদস্য। তার ছেলেকে জোর করে এ্ই জায়গা তাদের বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। টিপু তা না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৮ মার্চ এ জায়গা দখল করা চেষ্টা করেন বেলাল আহমদ ও তার সহযোগীরা। এ বিষয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানান।

সুনারা বেগম আরো জানান, গত ২৮ মার্চের ঘটনায় তার ছেলে তাজুল ইসলাম টিপু বক্স অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা নং-২৪/২০২৫ইং। এই মামলায় আসামি করা হয় মদিনা মার্কেট এলাকার নিবাস সি-২০ নাম্বার বাসার মৃত মাহমদ আলীর ছেলে আবদুল মনির ও আবদুল মুমিন এবং নগরীর নবাব রোডের মৃত আবদুল গফফারের ছেলে বেলাল আহমদকে। এই মামলায় আদালত দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি মিজানুর রহমানকে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার এবং আসামীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করে আগামী ১১ আগস্ট তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। 

তিনি আরো জানান, প্রায় ৩০ কোটি টাকার এই সম্পত্তি দখল করতে  ২০১৪ সালে তাদের আত্মীয়, হাওয়ারুন নেছা গং যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে একটি স্বত্ব বাটোয়ারা মামলা নং-৯৫/২০১৪ দায়ের করেন। যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। এরপর ২০২৩ সালে মোছা. হাওয়ারুন নেছা গং যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে আরেকটি স্বত্ব বাটোয়ারা মামলা নং-১৩৭/২০২৩ইং করে অন্তবর্তীকালীন আদেশসহ অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চান। কিন্তু আদালত তাদের এই আরজি খারিজ করে দেন। দুটি মামলার বাদী মৃত আবদুল গফফারের স্ত্রী সালেহা বেগম।

তিনি আরো জানান, গত ২৪ জুন দুপুরে তার ছেলে টিপু মার্কেটে গেলে খবর পেয়ে মহানগর যুবদলের সহসভাপতি বেলাল, ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি লখন আহমদ ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী এসে তার ছেলেসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর হামলা চালায় ও মার্কেট দখলের চেষ্টা করে। তবে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তারা সন্ত্রাসী বাহিনীকে প্রতিহত করেন। এই ঘটনায় উল্টো তার ছেলে টিপুসহ ১৫ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৬০-৭০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন নবাব রোড এলাকার বাসিন্দা আবদুল হক। হামলায় টিপু আহত হলেও অদৃশ্য কারণে পুলিশ তার মামলা নেয়নি বলেও জানান। এ অবস্থায় জানমাল রক্ষায় তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।


এসএ/সিলেট