ছাতকে ছাত্রনেতা জুবায়েরকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্রে জড়িতরাই অবশেষে ফেঁসে গেলেন

post-title

ছবি সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের ছাতকে সাবেক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে অবশেষে নিজেরাই ফেঁসে গেছেন একদল প্রভাবশালী ব্যক্তি।

এই ঘটনায় ছাতক উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের আব্দুল মুক্তাদিরের ছেলে উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আব্দুল বাকী মুহিত (৩০) এবং একই গ্রামের গনি মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মো. আব্দুল্লাহ ওরফে সনি (২৭) সহ মোট ১২ জন চিহ্নিত ব্যক্তি ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে গত বুধবার সন্ধ‌্যায় মামলা দায়ের হয়েছে।

ঘটনার সূত্র গত ৪ অক্টোবর রাতে ছাতক পশ্চিম বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পৌরসভার বাগবাড়ি গ্রামের কানাখালি রোডের সাত্তার টাওয়ারের সামনে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত ইলেকট্রিশিয়ান মো. হাসান আহমদ (২৫)-এর ওপর হামলা চালায়।

অভিযুক্তরা হাসানের পথরোধ করে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে অচেতন অবস্থায় অপহরণ করে সাত্তার টাওয়ারের ভেতরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক একটি মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়, যেখানে বলা হয় — “এহসানুল মাহবুব জুবায়ের মাদক ব্যবসায়ী এবং আমি (হাসান) তার সেল্টারে কাজ করি।”

অভিযোগ অনুযায়ী, পরবর্তীতে সেই জবানবন্দি ভিডিও ধারণ করে প্রচারের পরিকল্পনাও করা হয়েছিল।

রাজনৈতিক শত্রুতার জের ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাসান আহমদের সঙ্গে অভিযুক্তদের দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের সূত্র ধরেই এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে সামাজিকভাবে হেয় করা ও ভবিষ্যতে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়।

এ ঘটনার খবর পেয়ে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা তাঁকেও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে অপবাদ দেয়। জুবায়ের তখন ঘটনাটির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।

সেনাবাহিনীর সম্ভাব্য আগমনের আশঙ্কায় অভিযুক্তরা পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দিতে তড়িঘড়ি করে “মীমাংসার” নাটক সাজায় এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি আলাউদ্দিনের উপস্থিতিতে রাত আড়াইটার দিকে হাসানকে ছেড়ে দেয়।

উত্তেজনা ও প্রশাসনিক তৎপরতা এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পৌর শহরের বাগবাড়ি ও কালারুকা ইউনিয়নের গৌরিপুর-মুক্তিরগাঁও এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে দুই গ্রামের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সফিকুল ইসলাম খান বলেন,“ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

টিএ/ছাতক