নিউইয়র্কে সেনেট ও এসেম্বলির বিশেষ...
প্রবাসী বাংলাদেশিদের গর্ব বাড়িয়ে দিলেন এনটিভি ইউরোপের সিইও ও প্রভাবশালী মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সাবরিনা হোসেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেটে তিনি সেনেট ও...
আয়োজক: টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে
ছবি সংগৃহীত
সিলেট হবিগঞ্জের কৃর্তিসন্তান জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী হারুনুর রশিদ চৌধুরীর সম্মানে এক মতবিনিময় সভা ও সম্মাননা প্রদান করেছে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করা সংগঠন টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে।
২২ সেপ্টেম্বর পূর্ব লন্ডনের একটি হলে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও আলোচক ছিলেন লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও টাওয়ার হ্যামলেটম এর নির্বাহী মেয়র এর স্ট্রাটেজিক অ্যাডভাইজর (এথনিক মিডিয়া) মুহাম্মদ জুবায়ের, সাপ্তাহিক বাংলা পোষ্ট এর সম্পাদক, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ -সভাপতি ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী, ইউকে বাংলা লাইভ এর ফাউন্ডার, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আকরামুল হোসাইন ও রানার টিভির ফাউন্ডার , লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আ স ম মাসুম।
আলোচকবৃন্দ বলেন, টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে বাংলাদেশে অবসরপ্রাপ্ত প্রবীণ গুণীজনদের সম্মানে ধারাবাহিকতা লন্ডনেও রাখছে ,যা নি:সন্দেহে আলোকিত দিক। সংবর্ধিত অতিথি হবিগঞ্জের একজন কৃর্তিসন্তান- যিনি সাংবাদিকতা, মানবাধিকার ও সাংগঠনিক কর্মদক্ষতা দিয়ে সমাজ বিনির্মাণে কাজ করছেন।
এটা খুবই ইতিবাচক বর্তমান সময়ে সমাজে যেখানে সম্মান ও মানবিকবোধ ভুলন্ঠিত হচ্ছে- সেখানে আজকে মানুষ গড়ার কারিগরদের সম্মান, সহযোগিতা ও ভালোবাসা জানানোর পেছনের গুণীজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানীত করা হল।
হারুনুর রশিদ চৌধুরীর গর্বের জায়গা হল- তিনি টি আলী স্যার এর ছাত্র এবং তার বাবাও একজন শিক্ষক।
সংবর্ধিত অতিথি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, আমাকে লন্ডনে যেভাবে আপনারা সম্মান জানিয়েছেন তা অকল্পনীয়। টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে আয়োজিত এই সম্মান আমার জীবনের অনেক বড় অর্জন মনে করি।
তিনি বলেন, আমি গর্ববোধ করি যে, হবিগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও আদর্শ শিক্ষক টি আলী স্যারের ছাত্র। হবিগঞ্জে টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকের সমন্বয়ক এর দায়িত্বটি আমার দায়বোধ থেকেই করছি।
হবিগঞ্জের সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্রের ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে আলোকপাত করে বলেন, আমাদের হবিগঞ্জে গর্ব করার মতো সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে।একজন সংবাদকর্মী, সাংবাদিক নেতা কিংবা মানবাধিকার কর্মী সকল জায়গায় চেষ্টা করেছি মানুষের সেবা করতে।
তিনি বিলেতের অতিথি আলোচকদের প্রশংসা করে বলেন, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দের আলোচনা থেকে অনেক কিছু জানার সুযোগ হল। মাতৃভূমিকে নিয়ে আপনাদের কল্যাণকামী চিন্তা- চেতনা দেখে আমি ভাষাহীন আবেগ নিয়ে আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করছি।
ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফয়সল আহমদ রুহেল এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম অভি ও রাসেল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও সম্মাননা স্বারক প্রদান করা হয়। আট মিনিটের তথ্যচিত্রে ফুটে উঠেছে- দীর্ঘ চার যুগেরও বেশী সময় ধরে সমাজ বিনির্মাণে বিভিন্ন শাখায় তার সৃজনকর্মগুলো।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও টাওয়ার হ্যামলেটেস এর নির্বাহী মেয়র এর স্ট্রাটেজিক অ্যাডভাইজর (এথনিক মিডিয়া) মুহাম্মদ জুবায়ের মফস্বল সাংবাদিকতার ঝুঁকি ও পেশাগত বাস্তবতার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করে বলেন,হারুনুর রশিদ চৌধুরী হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব ও হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের নেতৃত্বে থেকে সাংবাদিকদের সুখে, দু:খে পাশে আছেন।
একজন কর্মনিষ্ঠ অভিজ্ঞ সংগঠক হিসাবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। মানবাধিকার কর্মী হিসাবে তার সাহসি ভূমিকা মূলত সমাজে বৈষম্যহীন ইতিবাচক বার্তা বহণ করছে।
তিনি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কল্যাণে হারুনুর রশিদ এর কাজের উদাহরণ টেনে বলেন, আমাদের সবারই শিক্ষক আছেন, এরকম কাজে সকলের যার যার অবস্থান থেকে কাজ করা নৈতিক দায়িত্ব ।
বিশেষ অতিথি সাপ্তাহিক বাংলা পোস্ট সম্পাদক ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী তার প্রয়াত শিক্ষক বাবার কর্মজীবনের স্মৃতি চারণ করে বলেন, হারুনুর রশিদও একজন গুণী শিক্ষককের সন্তান।
তিনি বাংলাদেশে ও বৃটেনে একজন শিক্ষককের বেতনকাঠামোর ব্যবধান কীভাবে পরিবার ও সমাজে প্রভাব বিস্তার করে এবং কমিউনিটিতে তাদের সম্পৃক্ততার দিক আলোকপাত করে বলেন, বাংলাদেশে অবসরকালীন একজন শিক্ষকের জীবন কীরকম অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতায় কাটে তা শিক্ষক পরিবারের কেউ না হলে অনুভব করা খুবই কঠিন।
টি আলী স্যার ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠন যতো বেশী সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে শিক্ষক তথা সমাজ ততো বেশী উপকৃত হবে।
ইউকে বাংলা লাইভ এর ফাউন্ডার লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আকরামুল হোসাইন বলেন, একজন সংবাদকর্মী সঙ্গতভাবেই সংবাদের পেছনের মানুষ। গুণী সাংবাদিক হারুনুর রশিদের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনকে আজ সচিত্রে দেখার ও সম্মানের কাজটি একজন সাংবাদিক হিসাবে আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। ভালো কাজ সমাজ কখনও ভুলেনা। এর উজ্জ্বল উদাহরণ সিলেটের এই সন্তান তার কাজের স্বীকৃতি পেলেন লন্ডনে অত্যন্ত সৃজনশীল অনুষ্ঠানে।
তিনি শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করা সংগঠনের সাথে আগামীতে কাজের প্রত্যয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, এরকম কাজের প্রচার ও প্রসার বেশী হলে অগণিত শিক্ষার্থী এরকম কাজে অনুপ্রাণিত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
রানার টিভির ফাউন্ডার ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আ স ম মাসুম সিলেট বিভাগে তার তৃণমূল সাংবাদিকতার উদাহরণ টেনে বলেন, আশির দশকের যে সময় দেশের অনেক জেলায় হাতেগুনা সাপ্তাহিক প্রকাশিত হতো , সেই সময়ে অনেকগুলো দৈনিক প্রকাশিত হতো হবিগঞ্জ থেকে। এটা সম্ভব হয়েছে হারুনুর রশিদ চৌধুরীর মতো গুণী সাংবাদিকদের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ও নেতৃত্বের কারণে ।
বাংলাদেশে সাংবাদিকতার ঝুকি ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার দিক আলোকপাত করে তিনি বলেন, এসবের মধ্যেও যারা ধারাবাহিকভাবে তৃণমূলে উন্নয়ন সাংবাদিকতা করছেন তাদের অবদানকে মূল্যায়ন করা খুবই জরুরী। টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকের হারুনুর রশিদ চৌধুরীর কর্মজীবন নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শণ ও সম্মাননার উদ্যোগটি অন্যান্য সংগঠনের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ হতে পারে বলে আমি মনে করি।
ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার মাসুদ চৌধুরী বলেন, ভালো কাজ ও সেবা করতে অবস্থান কোন বাধা নয়। প্রয়োজন উন্নত চিন্তা, চেতনা ও সুনিদিৃষ্ট কর্মপরিকল্পনা। টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকে লন্ডন থেকে যুগপথ বাংলাদেশে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কল্যাণে কাজ করছে। ট্রাস্টি ও কর্মকর্তা সবাই একনিষ্ট কর্মী এবং কাজের প্রতি দায়িত্বশীল বলেই মানব সেবায় প্রতিষ্ঠানটি অনুসরণীয় ।
ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও ৫২বাংলা টিভি ইউকের হেড অব কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স ছরওয়ার আহমদ বলেন, মানুষ গড়ার কারিগরদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি আত্নপ্রকাশ করে ২০১৯ সালে। শিক্ষকদের পাশাপাশি সমাজের সকল শাখার প্রবীণ ও গুণীজনদের আনুষ্ঠাকিভাবে সম্মাননা দেবার আমাদের প্রচেষ্টার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো – এসব দেখে যদি সমাজের গোটা কয়েকজনও অনুপ্রাণীত হয় তাহলে সমাজ উপকৃত হবে।
সিলেট বিভাগে টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন পদক ও বিশেষ সম্মাননা পদক শিরোনামে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও আগামী নভেম্বর মাসে সুনামগঞ্জে ( ২০২০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত) ৮০জন গুণী শিক্ষককে সম্মাননা প্রদান করতে পেরে আমরা গর্বিত।
অনুষ্ঠানে সম্মানীত অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন-ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ফিনান্সিয়াল এডভাইজার মো. এনাম হক, অবসরপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর ফ্লাইট সার্জন ফারুক উদ্দিন, মানবকল্যাণ সমিতির অন্যতম নির্বাহি ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি তারিকুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা ও সমাজকর্মী কয়েছ উদ্দিন, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ট্রেজারার সালেহ আহমদ ও এসিসটেন্ট সেক্রেটারী রেজাউল করিম মৃধা, ৫২বাংলা টিভির সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট সাদিক রহমান,বাংলা পেইজ এর সম্পাদক খালেদ রনি, গ্রেটার বড়লেখা এসোসিয়েশন ও গল্লাসাঙ্গন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এসোসিয়েশন এর সভাপতি খলিলুর রহমান, বিয়ানীবাজার জনকল্যাণ সমিতি ইউকের সহ সাধারণ সম্পাদক ওহিদ চৌধুরী, বাংলাদেশ হসপিটালিটি ওয়াকার্স ফোরামের সেক্রেটারী আব্দুল মোমিন বেলাল ও বাংলাদেশি-বৃটিশ বংশোদ্ভূত টি আলী স্যার এর নাতি ফাইনান্স এনালিস্ট ফরহাদ আহমদ প্রমুখ। অনুষ।ঠানে কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন,ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি ফখরুল ইসলাম।
টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন ইউকের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ডোনার কবির আহমদ ও ট্রাস্টি তারিকুল ইসলাম ।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ জুবায়েরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান কোষাধ্যক্ষ বদরুল ইসলাম , সহ সাধারণ সম্পাদক রাসেল চৌধুরী ও নির্বাহি সদস্য ওহিদ চৌধুরী ।
সাপ্তাহিক বাংলা পোষ্ট এর সম্পাদককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সহ-সভাপতি নজমুল ইসলাম তাপাদার, সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফখরুল ইসলাম,ট্রাস্টি সুমন মিয়া ও বেদার আহমেদ জিলু ।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আকরামুল হোসাইন কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ট্রাস্টি - সিরাজুল ইসলাম ,খয়রুল ইসলাম, রুহুল আমিন রুহেল।
বিশেষ অতিথি রানার টিভি ফাউন্ডার ও লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক কোষাধ্যক্ষ আ স ম মাসুমকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান সহ-কোষাধ্যক্ষ শফিকুর রহমান ( ছুট )ট্রাস্টি কয়েছ উদ্দিন, ফারুক উদ্দিন ,জিলাল আহমদ।
টি আলী স্যারের জন্মভূমি বৃহত্তর জলঢুপ গ্রামের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান- গ্রামের সুসন্তান নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সালেমান, সায়েক ইসলাম প্রমুখ।
ফাউন্ডেশনের সভাপতি ফয়সল আহমদ রুহেল ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম অভি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া অতিথিবৃন্দ, ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা, ডোনার, ট্রাস্টিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সকলের সহযোগিতায় একটি সৃজনশীল অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
…………………………………………..
এসএ/সিলেট