পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত : হুমকির মুখে নদী তীরবর্তী বসতবাড়ি

post-title

ছবি সংগৃহিত

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢল নেমে পিয়াইন নদীতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সোমবার সকাল থেকেই ভারতের মেঘালয় হয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জাফলংস্থ পিয়াইন নদী এবং সারী নদীর উৎপত্তিস্থল  দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে পাহাড়ি ঢলের পানি।

এতে জাফলংয়ের জিরো পয়েন্টসহ নদী তীরবর্তী আশপাশের এলাকার নিম্নাঞ্চল দ্রুত প্লাবিত হয়েছে। অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হওয়ায় শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙন। এতে আশপাশের বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। জাফলংয়ে অস্থায়ী ভাবে গড়ে উঠা নদীগর্ভে থাকা দোকানপাট ইতোমধ্যেই পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরনের পর্যটন কার্যক্রম। নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাফলং ছাড়াও গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ এবং কানাইঘাট উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকা গুলোতেও পানির প্রবল গতি ও ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে।

এসব এলাকায় বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে নদীগর্ভে বসতবাড়ী বিলিনের পাশাপাশি নানাবিধ সমস্যায় পড়বে এ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের হাজারোও পরিবার।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সিলেট ও ভারতের মেঘালয় অঞ্চলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে নদীর পানি আরও বাড়তে পারে এবং বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করে আকস্মিক বন্যা সতর্কতা জারি করেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে, সুরমা, কুশিয়ারা ও সারী নদীতেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, এসব নদীর পানি উপচে পড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রতন কুমার অধিকারী বলেন, গোয়াইনঘাট উপজেলার ৩০ভাগের বেশি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বারদের সমন্বয়ে ২৬টি আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হলেও আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হলে উদ্ধার কাজের জন্য সকল প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।





এসএ/সিলেট