গোয়াইনঘাটে আমন ধানের মৌ-মৌ গন্ধে কৃষকদের মুখে হাসি

post-title

ছবি সংগৃহিত

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা আগাম আমন ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। সোনালী ধানে ভরে উঠেছে ফসলের মাঠ। সবুজের সমাহার এখন রূপ নিচ্ছে সোনালী রঙে। চারদিকে নতুন ধানের মৌ-মৌ ঘ্রাণে মুখর পুরো এলাকা। এখনো আমন কাটার মূল মৌসুম শুরু না হলেও উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮/১০টি ইউনিয়নে চলছে আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াইয়ের উৎসব।

গ্রামীণ জীবনে এখন বইছে নবান্ন উৎসবের আমেজ। নতুন ধানের চাল দিয়ে ক্ষীর-পায়েস, পিঠা-পুলি বানিয়ে অতিথি আপ্যায়নে মত্তো থাকবে কৃষক কৃষাণীরা। কর্মব্যস্থতায় ভরে উঠেছে গ্রামাঞ্চল,চারিদিকে আনন্দ আর উচ্ছাসের ছোঁয়া। ক্ষেতজুড়ে সোনালী ধান দোল খাচ্ছে, কৃষক পরিবারে বইছে আনন্দের জোয়ার মা-বাবা, সন্তান ও কৃষাণীদের মুখে হাসির ঝিলিক। কিন্তু ন্যায্য মুল্য পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা।

উপজেলার প্রায় স্থানেই শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের উৎসব। কৃষকরা জানাচ্ছেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় আগাম জাতের আমন ধানের ফলন হয়েছে আশানুরূপের চেয়েও ভালো। তবে শুরু ধানের বাজার দর তুলনামূলক ভাবে ভালো থাকলেও বর্তমানে দাম পড়ে যাওয়ায় ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

অনেকেই বলছেন, আগাম জাতের আমন ধান অল্প সময়ে ঘরে তোলা যায় ফলে একই জমিতে পরবর্তীতে স্বল্প মেয়াদী ফসল হিসেবে শীতকালীন সবজিসহ আলু,সরিষা চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। আবার ফসল তুলেই সেই জমিতেই যথাসময়ে বোরো ধান চাষ করা যাবে।

উপজেলা কৃষি অফিস গোয়াইনঘাট সুত্র জানিয়েছে, এবারে আমন মৌসুমে আগাম ব্রী-৭৫ জাতের ১১৭ হেক্টর, বীনা-৭জাতের ২৫ হেক্টর, বীনা-১৭ জাতের ১২৫ হেক্টর, ব্রী-৯০ জাতের ৭১৫ হেক্টর, আতপ জাতের ৪৬০ হেক্টর ও হাইব্রীড ধানী গোল্ড জাতের ধানসহ মোট ১৮১৮০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ রনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর আমনের খুবই ভালো হয়েছে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় রোগবালাই কম হওয়ার ফলে এবারের আমন ফলন দ্বিগুন আশা করছি।

পূরো উপজেলায় আমন ধান কর্তৃন ঢালাওভাবে শুরু করতে এখনো একসপ্তাহের মতো সময় লাগবে। গোয়াইনঘাট উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা রঞ্জু কুমার সিংহ বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারীত আমনের মন প্রতি ১৩৬০টাকা মূল্য নির্ধারন করা হয়েছে। এতে কৃষক কৃষাণী ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে বলে মনে করছি। ধান মজুদ বিষয়ে কথা হলে তিনি আরও জানান, এবছরের আমন ফলন ভালো হওয়ায় সরকারের চাহিদার চেয়ে বেশি ধান মজুদ করা সম্ভব হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রতন কুমার অধিকারী বলেন, বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে কৃষকের ঘাম ঝড়ানো সোনালী ফসলে উপজেলার সর্বত্র মাঠে আমন ধাণের ঘ্রাণে কৃষক পরিবারের মাঝে উল্লাসের আমেজ বইছে। গত বছরের চেয়ে এবারের আমন ধাণের আশানুরূপ ফলনে কৃষকরা আনন্দিত। উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে আমনের আগাম কর্তন শেষে শীতকালীণ সবজিচাষে উদ্ভোদ্ধ হচ্ছে কৃষকরা।



এসএ/সিলেট