কুলাউড়া বিএনপির কাউন্সিলে পাঁচ নেতার বাজিমাত

post-title

ছবি সংগৃহিত

কুলাউড়ায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও শতভাগ কাউন্সিলরদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্যদিয়ে উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন ও কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে।

শনিবার (১৩  সেপ্টেম্বর) পৌর শহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে ৯২৩ জন কাউন্সিলর গোপন ব্যালটে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নেতা নির্বাচন করেন। ৫ পদে মোট ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। যারা বিজয়ী হয়েছেন প্রত্যেকেই সাবেক ছাত্রনেতা ও বিএনপির ত্যাগী নেতা। এবারের কাউন্সিলে তারা হেভিওয়েট প্রার্থীদের হারিয়ে  বাজিমাত করেন। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কাউন্সিল অধিবেশনের ফলাফল ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন। এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন বিএনপি’র সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি. কে. গউছ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির বিদায়ী আহবায়ক মো. রেদওয়ান খাঁন। কাউন্সিলে সভাপতি পদে ৪৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কুলাউড়া পৌরসভার পাঁচবারের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন বাচ্চু। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি বিএনপি নেতা শওকতুল ইসলাম শকু পান ৪২৫ ভোট। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ৩৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল জামাল। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি বিএনপি নেতা আজিজুর রহমান মনির পান ৩৪৮ ভোট, বদরুল হোসেন খান ১৭২ ও জয়নুল ইসলাম জুনেদ পান ৩৮ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে ৩৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি শামীম আহমদ চৌধুরী পান ৩২৯ ভোট, সুফিয়ান আহমদ পান ১৯৯ ভোট।  সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে ৪১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা কমর উদ্দিন আহমদ কমরু। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি মইনুল হক বকুল পান ৩৩৮ ভোট ও সারোয়ার আলম বেলাল পান ১৬১ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৩২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা আব্দুল মুক্তাদির মনু। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি সাবেক ছাত্রনেতা সিপার আহমদ পান ২৫৩ ভোট, দেলোয়ার হোসেন ২১৫ ভোট, নুরুল ইসলাম ইমন ৭৭ ও মঈন উদ্দিন স্বপন পান ৪০ ভোট।  এরআগে শনিবার দুপুরে প্রথম অধিবেশনে কেন্দ্রীয়, জেলা-উপজেলার নেতৃবৃন্দসহ ১৩টি ইউনিয়নের সভাপতি-সম্পাদকের উপস্থিতিতে জাতীয়, দলীয় সংগীত ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।

সম্মেলন পর্বে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রেদওয়ান খানের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি’র সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি. কে. গউছ। প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন বিএনপির সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, সাবেক সাধারণ
সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য এডভোকেট আবেদ রাজা, মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, জেলা বিএনপির  প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মৌলভী আব্দুল ওয়ালী সিদ্দিকী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিএনপির বিগত সময়ের প্রয়াত নেতাদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য বিএনপি নেতা সাইফুল আলম চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি’র সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি. কে. গউছ বলেন, আওয়ামীলীগের মন্ত্রী ও এমপি সবাই পালিয়েছে কিন্তু তাদের বীজ এদেশে রেখে গেছে। ‘আওয়ামীলীগের বীজ আগামী নির্বাচনে বিএনপির বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। একটি দল তাদের ছত্রছায়ায় সেই বীজকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং আগামী নির্বাচনে তাদের সহযোগিতা নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের সব সময় প্রস্তুত থাকতে হবে, আগামী নির্বাচনে অনেক কঠিন লড়াই হবে এবং সেই লড়াইয়ে গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি বিএনপির বিজয় হবে।’

তিনি বলেন, ‘দেশি-বিদেশি সব ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়ে বিএনপি পরিবারের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশ থেকে আওয়ামী লীগ পালিয়েছে ঠিকই কিন্তু আওয়ামী শক্তি মি

লে যারা আগামী জাতীয় নির্বাচনকে বানচালের চেষ্টা করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, বিএনপির কবর রচনা করতে চেয়েছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ। তারা জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছে। নানা নির্যাতন, হামলা, মামলা, গুম-খুন চালিয়েছে। তবুও বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এখন শুভদিন এসেছে।


এসএ/সিলেট