সুনামগঞ্জে ব্যবসায়ী সেজে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত : প্রতারক চক্রের ৬ সদস্য আটক

post-title

ছবি সংগৃহীত

সুনামগঞ্জে ভূয়া ব্যবসায়ী সেজে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চাঞ্চল্যকর ঘটনার সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৬ জনকে আটক করেছে র‌্যাব।

র‌্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র‌্যাব-৯ ও র‌্যাব-১৩ এর যৌথ অভিযানে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার শ্রীবর্দীপুর ঘোষপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

র‌্যাব জানায়,  গত ৫/৬ মাস পূর্বে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র প্রতারণার উদ্দেশ্যে স্ব-পরিবারে সুনামগঞ্জে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করে এবং সুনামগঞ্জের পেয়াজ, রসুন, আলু ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে একটি প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি সুনামগঞ্জের রাধানগর সাকিনে মেসার্স আব্দুল্লাহ বানিজ্যালয় নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করেন। তারা বাজার দরের চেয়ে কম মূল্যে পেয়াজ, রসুন ইত্যাদি পন্য পাইকারীতে সুনামগঞ্জের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে বেশ কিছুদিন এভাবে ব্যবসা করে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের কাছে বিশ্বাস অর্জন করে।

পরবর্তীতে তারা পেয়াজ, রসুন ইত্যাদি পন্যের একটি বড় চালান অন্য জেলা হতে সুনামগঞ্জে নিয়া আসার আশ্বাস দিয়ে এবং অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে পেয়াজ, রসুন ইত্যাদি পন্যের চালানের অর্ডার কনফার্ম করার জন্য সুনামগঞ্জের স্থানীয় ব্যবসায়ী ও দোকানদারের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকার উপরে নগদ টাকা গ্রহণ করেন।

এ বছরের ২৮ এপ্রিল সুনামগঞ্জ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নগদ টাকা আত্মসাতের কয়েক ঘন্টা পর তারা তাদের প্রতিষ্ঠান তালাবদ্ধ করে এবং তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে অন্যত্র চলে যায়। এতে করে সুনামগঞ্জের স্থানীয় ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের মধ্য হতে একজন বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনার পর র‌্যাব-৯ সুনামগঞ্জ ক্যাম্প তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের সহায়তায় তদন্ত শুরু করে। পরে র‌্যাব-৯ সুনামগঞ্জ ও র‌্যাব-১৩ গাইবান্ধার যৌথ অভিযানে কিশোরগঞ্জ জেলার ছয় জনকে আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বাসুরদিয়ার গ্রামের আবুল হাসেমের ছেলে রফিকুল ইসলাম সোহেল, তার স্ত্রী নারগিস আক্তার, নিকলি উপজেলার নাগার ছিহাটি গ্রামের আব্বাস উদ্দিনের মেয়ে শাহানা পারভীন, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলাই গ্রামের হেকিম মিয়ার ছেলে মশিউর রহমান ওরফে মাসুক, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার আ. হেকিমের ছেলে শফিউর রহমান এবং তার স্ত্রী রিনা আক্তার।

র‌্যাব জানায়, এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি ইতো পূর্বেও অন্যান্য জেলায় মতো প্রতারনা করে ব্যবসায়ীদের টাকা আত্মসাত করেছে এবং বর্তমানে গাইবান্ধা জেলাকে টার্গেট করে প্রতারনার ফাঁদ তৈরি করেছিল।

আটকদের পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য সুনামগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র‌্যাব জানায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এসএ/সিলেট