বিভেদ নয়, ঐক্যের ভিত্তিতেই কল্যাণমূলক...
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খেলাফত মজলিস সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনে মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হাফিজ মাওলানা আব্দুল কাদির–এর সমর্থনে...
ছবি সংগৃহীত
সুনামগঞ্জের ছাতকে বোনকে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের জেরে শালা-সম্বন্ধিরা কুপিয়ে হত্যা করেছে তাদের ভগ্নিপতিকে। বুধবার বিকেলে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের পুর্ব দারগাখালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আল আমি ওই গ্রামের আক্কাছ আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আহতরা সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ১০ বছর আগে ছাতকের পুর্ব দারগাখালি গ্রামের আক্কাছ আলীর পুত্র আল আমিনের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের নভাগিকান্দির কাদির মিয়ার মেয়ে দিলারা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। আল আমিন যৌতুকের জন্য দিলারাকে মারধর করত। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিসি বৈঠক হয়েছে। ইদানীং বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের মধ্যে ফের ঝগড়া হচ্ছিল। বুধবার সকালে দিলারাকে খুব মারধর করে আল আমিন। দিলারা সংবাদ দেয় বাপের বাড়ি। দিলারার মা ময়মুন নেছা, ভাই আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান বিকালে সেখানে যান। দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি বাধে। আল আমিনের দায়ের কোপে শাশুড়ি ময়মুন নেছার একটি হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত কেটে যায়।
আহত হয় দিলারার দুই ভাই আব্দুর রহমান ও আব্দুল্লাহ। পরে তাদের মারধর এবং দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন আল আমিন। খবর পেয়ে গ্রামের লোকজন জড়ো হন। আল আমিনকে উদ্ধার করে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে রাত ৩টার দিকে আল আমিন মারা যায়।
নিহত আল আমিনের বোন জামাই সিরাজুল ইসলাম জানান, স্ত্রীর সাথে আল আমিনের ঝগড়া হয়। এর জেরে শশুরবাড়ির লোকজন এসে কুপিয়ে তাকে জখম করে। গ্রামবাসী তাদের একজনকে আটক করে। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। আর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আল আমিন মারা যায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিক জানান, আছরের পরে জানতে পারেন আল আমিনকে তার শশুর বাড়ির লোকজন মারধর করেছে এবং তারা একজনকে আটকে রেখেছে। এরমধ্যেই কোম্পানীগঞ্জের সানুর আলী মেম্বার তাকে কল দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই আল আমিনকে হাসপাতালে নেয়া হয়। কোম্পানীগঞ্জের আহতদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই এবং গ্রামবাসীর হাতে আটক ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। তিনি আরও জানান, আল আমিন ও তার স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত। পাঁচ-সাত বছর বয়সের তাদের দুটি পুত্র সন্তান আছে।
দিলারার চাচা ছাদির মিয়া জানান, আমার ভাতিজা বিকেলে কল দিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করতে বলে। আমি সিলেটে মাছের ব্যবসা করি বিধায় আমার পক্ষে ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব না হচ্ছিল না। তাই সানুর মেম্বারসহ চার-পাঁচজনকে পাঠাই। তিনি আরও জানান, আল আমিন যৌতুকের জন্য ভাতিজিকে নিয়মিত মারধর করত। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ বিচার হয়েছে।
তক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ছিল। বুধবার সকালে স্ত্রীকে মারধর করে স্বামী। খবর পেয়ে স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোকজন আসলে মারামারি বাঁধে। আল আমিনকে তার শালা-সম্বন্ধিরা কুপিয়ে জখম করে। ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
এসএ/সিলেট