সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

আওয়ামী লীগ নেতার কবল থেকে ধর্মগ্রাম হাওর রক্ষার দাবি

post-title

ছবি সংগৃহিত


গোয়াইনগাটের ধর্মগ্রাম হাওরের ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে আওয়ামী লীগ নেতা শুকুর আলীর। বিগত সরকারের আমলে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া শুকুর আলী এলাকায় গড়ে তুলেছেন একটি লাঠিয়াল বাহিনী। তার অপরাধমূলক কর্মকাÐের প্রতিবাদ করতে গিয়ে চাঁদাবাজির মামলায় জেল খাটতে হয়েছে। মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন ধর্মগ্রামের তজম্মুল আলীর পুত্র মোহাম্মদ সালেহ রাজা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে শুকুর আলী প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন। হাওর থেকে ছন কুড়িয়ে জীবন চলানো সেই শুকুর গড়ে তুলেন একটা নৌকা সমিতি। এ সমিতির সদস্য হতে হলে আগে নৌকার ভোটার কি না তা নিশ্চিত করা হতো। আওয়ামী আমলে যেকোনো নির্বাচনে প্রার্থীদের কালো টাকার বস্তা চলে আসতো শুকুর আলীর দোকানে। এসব টাকায় তিনি বড় দোকানের মালিক হন এবং নিজের একটা লাঠিয়াল বাহিনী গড়ে তুলেন।

এই বাহিনীর সদস্যরা হলেন তার ভাই মোহাম্মদ এখলাছ, মো. রহিম উদ্দিন, মো. সিরাজ, মো. রিয়াজ, মো. সামছুর উদ্দিন, আলীম উদ্দিন, মো. দেলোয়ার, মো. সেলিম, মো. শরীফ, মো. বাবুল হোসেন মনির, মো. জয়রুদ্দিন, মো. মনির আহমদ, মো. জলাল এবং ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. জসিম। এই বাহিনী এখনো বহাল তবিয়তে আছে এবং এলাকার সাধারণ মানুষকে নানাভাবে নির্যাতন করছে।

তিনি অভিযোগ করেন, পাঁচ আগস্টের পর শুকুর আলীর নজর পড়ে ধর্মগ্রাম হাওরের ওপর। সরকার হাওরের জায়গায় কেনাবেচা বন্ধ রাখলেও শুকুর কিছু গরীব মানুষকে, পাঁচ/দশ হাজার টাকা করে দিয়ে রেজিস্ট্রার করে নিয়েছে অনেক জায়গা।  তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দেয় এবং গ্রেপ্তার হন। এর আগে শুকুর আলীর লোকজন বারহাল বাজারে তার দোকান লুটপাট এবং মারধোর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এলাকার লোকজন তার পক্ষে মানববন্ধন ও নানামুখী প্রতিবাদ জানালে পাঁচদিন জেল খেটে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। তখন জানতে পারেন কোন এক বিশেষ ইসলামি দলের উপজেলা আমিরের সুপারিশে এবং বড় অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। তিনি প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা পালানোর পরও কেন ডেবিলদের হাতে নির্যাতনের শিকার হব।

সালেহ রাজা আরও জানান, হাওরের পরিবেশ সংরক্ষণে তিনি উচ্চ আদালতে একটি রিট (নং-৮০৭৬/২০২৫) দায়ের করেছিলেন। গত ১৩ জুলাই আদালত বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। কিন্তু তদন্ত শুরু না হওয়ায় গত ১২ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। এরই প্রেক্ষিতে গত ২০ আগস্ট সচিব, ইউএনও, এসিল্যান্ড ও তহসিলদার ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু তাদের সামনেই দখলদাররা দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি ধমকি দিলে তারা ফিরে যান। দখলদারি ও হাওরের পরিবেশ ধ্বংস চলতেই থাকে। দু’দিন আগে শুকুর ও তার লোকজন নিরীহ মানুষকে হাওরে গরু চরাতে নিষেধ করেছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। সবাই সন্ত্রস্ত, তারা সরকারি সম্পদ গ্রাস করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, লান্দু, কুরিহাই, ধর্মগ্রাম ও খলাগ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষ এই হাওরের ওপর জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন। ও্ই এলাকার সাধারণ মানুষের স্বার্থে এ ব্যাপারে দ্রæত পদক্ষেপ নিতে তিনি নবাগত জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এসএ/সিলেট