মাত্র ১০ দিন আগে বিয়ে করেন

অপহরণের তিন দিনেও উদ্ধার হননি নয়ন চন্দ্র

post-title

মাত্র ১০ দিন আগে বিয়ে করেন নয়ন চন্দ্র দাস (২৬)। এরই মধ্যে অপহরণের শিকার হয়েছেন তিনি। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণের তিন দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি। অপহরণকারীরা তার মুক্তির জন্য ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং বিষয়টি পুলিশ বা অন্য কারও কাছে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে। বাজার থেকে প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক বাজার থেকে গত রোববার (১৬ মার্চ) সকালে নয়ন দাসকে অপহরণ করা হয়। তিনি রামু চন্দ্র দাসের ছেলে। মাত্র ১০ দিন আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি।

রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নে নয়নকে অপহরণ করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১টা পর্যন্ত অপহরণের ৫২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অপহরণকারীদের দাবি, সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে নয়নকে নিরাপদে ফেরত দেওয়া হবে। তবে তাদের দেওয়া নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সন্তানকে ফিরে পেতে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অর্থ জোগাড় করলেও অপহরণকারীদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৫২ ঘণ্টা। নয়ন দাসের পরিবারের এখন সময় কাটছে অজানা শঙ্কা আর উদ্বেগের মধ্যে। শুধু নয়নের পরিবারই নয়, প্রতিবেশীসহ আশপাশের অনেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বিষ্ণু দেব জানান, নয়ন প্রতিদিনের মতো সকাল ৯টার দিকে দোকান খুলে পূজা করছিলেন। সকাল ১০টার দিকে দুই ব্যক্তি বাজারে ঘোরাফেরা করছিলেন। তাদের কোমরে ওয়াকিটকি জাতীয় কিছু একটা ছিল।

বাজারের ব্যবসায়ী জুয়েল দাস বলেন, নয়নকে প্রকাশ্যে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৫০ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। আমরা সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছি।

নয়নের পাশের দোকানি অপূর্ব দেবনাথও অপহরণের ঘটনার সাক্ষী। এরপর থেকেই পুরো বাজারের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কগ্রস্ত। ব্যবসায়ী হরিমন রায় জানান, নয়নের অপহরণের পর থেকে অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ রেখেছেন। কেউ আসলেও সকালে না এসে দুপুরের দিকে আসছেন।

অপহরণ হওয়া নয়ন দাসের মা রত্না রানী দাস বলেন, গত রোববার সকালে আমার ছেলে দোকানে যেতে বের হয়েছিল, তারপর থেকেই তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। রাতে কিছু লোক ফোন করে জানায়, সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে ১০ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখতে। কেউ কিছু জানতে পারলে নয়নকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। অনেক কষ্ট করে টাকা জোগাড় করেছি, কিন্তু অপহরণকারীদের কোনো ফোন পাইনি। আমার ছেলেটা বেঁচে আছে কি না, তাও জানি না।

নয়নের চাচা সুভাষ চন্দ্র দাস বলেন, আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনো তাকে উদ্ধার করা যায়নি। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি, দ্রুত নয়নের সন্ধান চাই।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম সমকালকে জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে নয়ন দাস নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পেয়েছেন তারা। কয়েকটি সূত্র ধরে অপহরণকারীদের খোঁজার চেষ্টা চলছে। ডিবি ও র‍্যাবের মাধ্যমে নয়নকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের ধরতে অভিযান চলছে।


সিলেট বাণী ডেস্ক