শাবিপ্রবিতে লাগামহীনভাবে বাড়ছে ভর্তি ও সেমিস্টার ফি

post-title

ছবি সংগৃহীত

শাহজালাল ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) লাগামহীনভাবে বাড়ছে ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি ও ক্রেডিট ফি। বিগত তিন বছরের ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি ও ক্রেডিট ফি'র তথ্য অনুসন্ধান করলে দেখা যায় পূর্বের তুলনায় সবকিছুই দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত তিন বছরে ভর্তি ফি বেড়েছে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন ভর্তি কমিটি ও  ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি ছিল ৮ হাজার ১০০ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। ভর্তি ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করলেও তা কমানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি তৎকালীন প্রশাসন।

এর পরের বছর আরও ২ হাজার ২৫০ টাকা বাড়িয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি নেওয়া হয় ১৭ হাজার ২৫০ টাকা। সম্প্রতি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফি বাড়িয়ে ১৮ হাজার টাকা নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইভাবে তিন বছরের ব্যবধানে সেমিস্টার ফি ও ক্রিকেট ফি ও বাড়ানো হয়েছে কয়েকগুণ। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিভাগের উন্নয়ন ফি ছিল ৩ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে নেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ২৫০ টাকা। ২ বছরে এত টাকা ফি বৃদ্ধিতে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীরাও।

ভর্তি ফি'র পাশাপাশি কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে সেমিস্টার ফি ও ক্রেডিট ফিও। ২০২২ সালে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফি ছিল ২ হাজার ৪ শত ৩০ টাকা। সেখানে ২ বছরের ব্যবধানে ২০২৪ সালে সেমিস্টার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩ শত ৪৫ টাকা। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত তত্ত¡ীয় প্রতি ক্রেডিটের মূল্য ছিল ১০৫ টাকা। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রতি তত্ত¡ীয় ক্রেডিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪০ টাকা। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক প্রতি ক্রেডিটের মূল্য ছিল ১৬০ টাকা। সেটি যথাক্রমে বৃদ্ধি করে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি বছর এরকম লাগামহীন সেমিস্টার ফি ও ক্রেডিট ফি বৃদ্ধিতে ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষার্থীরা।

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ মিয়া বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়তে আসে তারা বেশিরভাগই চাষাভুষার সন্তান। বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে চলার মত অবস্থা তাদের অনেকের নেই। এমতাবস্থায় সেমিস্টার ফি-এর ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি যেন মরার উপর খাড়ার গা। এটা অমানবিক, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে সেমিস্টার ফি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা। কিন্তু ফি বাড়িয়ে রীতিমতো শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন করা হচ্ছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাই দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সকল ধরনের ফি যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হোক।' ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী সুমন বলেন, আমাদের কাছ থেকে কিছু অযৌক্তিক খাতে  অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। তারমধ্যে অনেকগুলোর সেবা আমরা পাচ্ছি না। প্রশাসনের উচিত খাতগুলো কমিয়ে প্রয়োজনীয় খাতগুলোতেও প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা না নেয়া। এ ব্যাপারে জানতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজেদুল করিমকে বারবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।


এসএ/সিলেট