সিলেট চেম্বারে ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে...
সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্সে আওয়ামী স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট পরিষদ বাতিল করে প্রতিনিধিত্বশীল পরিচালনা পর্যদ গঠনের দাবি...
গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট’র সংবাদ সম্মেলন
সিলেটবাসী তথা প্রবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন গ্রেট ব্রিটেনের প্রাচীন ও বৃহত্তম সংগঠন গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ইউকে। বুধবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন দাবি জানান সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খসরু খান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অক্সিজেন হিসেবে কাজ করা প্রবাসীদের সমস্যা পাহাড়সম। তারা মনে করেন সিন্ডিকেট বিহীন এই সরকার প্রবাাসীদের কিছু জরুরি দাবি নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করতে পারেন। ইতিমধ্যে এয়ারপোর্টে প্রবাসীরা নেমে কথা বলার জন্য ফ্রি টেলিফোন বুথ চালু, প্রবাসী লাউঞ্জ উদ্বোধন ও ন্যূনতম সময়ের মধ্যে লাগেজ খালাসের ব্যবস্থা করায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।
খসরু খান বলেন, আমরা কয়েক যুগ ধরে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরকে প্রকৃত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে চালুর দাবি জানিয়ে আসলেও সেটি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। বৈষম্য ও ষড়যন্ত্রের কারণে সিলেটবাসীর দাবি বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটগুলো সিলেট থেকে ইংল্যান্ড আসতে পারছে না। এ দাবি বাস্তবায়িত হলে বিমানের একচেটিয়া আধিপত্য বন্ধ হবে। প্রতিযোগিতার ফলে টিকেটের দাম কমে আসবে। বাংলাদেশে কার্গো প্রেরণের ক্ষেত্রে যে নৈরাজ্য চলছে সেটিরও অবসান হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট বানাতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নিয়ম ইংল্যান্ডসহ সারা বিশ্বে বসবাসরত বাংলাদেশিদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন অজুহাতে ঘুষ দাবি করে হয়রানি করে চলেছে। পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে কারো বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী ও ফৌজদারি অভিযোগ ছাড়া সকল ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নিয়ম বন্ধের দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স দেশের অক্সিজেন হলেও দেশে রেমিটেন্স পাঠাতে গিয়ে প্রতারিত হন। এক সময়ে মানুষ লাইন ধরে নিশ্চিন্তে টাকা পাঠাতো সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে। এই ব্যাংকটাকেও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় শেষ করে দেয়া হয়েছে। সোনালী ব্যাংককে আবার সগৌরবে ফিরিয়ে আনতে বৈষম্য বিরোধী সরকারের প্রতি দাবি জানান। তিনি বলেন, প্রবাসীদের আরেক যন্ত্রণার নাম পাওয়ার-অব-এটর্নি। প্রবাসীদের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করতে কাউকে দায়িত্ব দিতে বিলেত থেকে পাওয়ার অব এটর্নি করতে গেলে হাজারো বিপত্তি। এ ব্যাপারে তারা ব্যক্তিগত পরিচয় নির্ধারণের জন্য, যেকোন বিদেশি বৈধ পাসপোর্টকে আইডি হিসাবে গণ্য করার এবং অসুস্থ অথবা ডিজেবল মানুষের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফি এর মাধ্যমে তাদের হোম সার্ভিস প্রদানের দাবি জানান।
বিমানে সিলেট ্আসতে ভাড়ার যে বৈষম্য তা নিরসনে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশী প্রবাসীদের ৩য় বৃহত্তম শহর বার্মিংহাম থেকে সরাসরি বিমানে ফ্লাইট চালুর দাবি জানান। তিনি বলেন, সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে প্রবাসী সেল চালু করলেও এই সেলের বাস্তব কার্যক্রম আমরা দেখি না। এয়ারপোর্টে বিপদে পড়া এবং রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের অসহায় মুহূর্তে ডিসি অফিসের প্রবাসী সেলের কার্যক্রম জোরদারের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসীদের স্বার্থে প্রতিটি হাইকমিশনে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি দেয়ার দাবি জানানো হয়। যিনি ওই দেশে প্রবাসীদের শিক্ষা, কর্ম ও দেশকে প্রমোট করার ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন। এছাড়া দেশের স্বার্থে প্রবাসীরা নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত ড্রেজিং, অপরিকল্পিত বালু তোলা বন্ধ এবং নতুন খাল কেটে অনাবাদি জমিগুলোকে কৃষির আওতায় আনার আহবান জানান। তারা লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয় ব্যয়ের হিসাবের অডিট রিপোর্ট প্রতি বছর প্রকাশ করার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জিএসসি ইউকে’র সাবেক ভাইস চেয়ার মোহাম্মদ ইছবাহ উদ্দিন, সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি প্রফেসর কবির আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আফিকুর রহমান আফিক, ট্রেজারার আলী আহসান হাবিব, হাজী আজমান আলী, মিজান রেজা চৌধুরী, সুলতান খান, সিলেট চ্যাপ্টারের সাংগঠনিক সম্পাদক মো নজরুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, মহিলা সম্পাদক শারমিন কবির, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা চৌধুরী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কয়েস আহমেদ সাগর, যুব বিষয়ক সম্পাদক আমিন তাহমিদ প্রমুখ।
এসএ/সিলেট