জিরান গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষের সংবাদ সম্মেলন

যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছামুয়েলের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অপপ্রচারের অভিযোগ

post-title

ছবি সংগৃহীত

নগরের মিরের ময়দানস্থ জিরান গেস্ট হাউস ও ফার্মিস গার্ডেনকে জড়িয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আলিনুর মোহাম্মদ ছামুয়েলের বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট এবং মানহানিকর বলে দাবি করেছেন জিরান গেস্ট হাউসের স্বত্বাধিকারী মো. গোলাম রববানী।

রোববার (২০ অক্টোবর) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন, ছামুয়েল প্রায়ই নগরের বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করে প্রতারণাসহ নানা অপকর্ম করে পালিয়ে যান। জিরান গেস্ট হাউস ও ফার্মিস গার্ডেনের বকেয়া লাখ লাখ টাকা পরিশোধ না করে পালিয়ে গিয়ে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উল্টো অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

লিখিত বক্তব্যে গোলাম রব্বানী বলেন, বালাগঞ্জের মোহাম্মদপুর গ্রামের জুনায়েদ আহমদের ছেলে লন্ডন প্রবাসী আলিনুর মোহাম্মদ নগরের মিরের ময়দানস্থ জিরান গেস্ট হাউস এবং ফার্মিস গার্ডেনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করেছেন।

তিনি বলেন, গত ২ জুলাই জিরান গেস্ট হাউসে ওঠেন ছামুয়েল। এখানে থাকাকালে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি ও একজন নারী তার সঙ্গে প্রায়ই দেখা করতে আসতেন। আমরা ওই নারীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি চাচাতো বোন হিসেবে আমাদের কাছে পরিচয় দেন। হোটেরে অবস্থানের এক পর্যায়ে আমরা ভাড়া চাইতে গেলে তিনি গত ২০ আগস্ট এক লাখ ৩০ হাজার টাকার একটি চেক প্রদান করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, প্রবাসী আলিনুর মোহাম্মদ ছামুয়েল বিনা নোটিসে হোটেল থেকে পালিয়ে যান। তার পলায়নে আমরা আশ্চর্য হই এবং ব্যাংকে চেক নিয়ে গেলে জানতে পারি ওই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নাই।

পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ছামুয়েলের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। পরে, মিরের ময়দানস্থ হোটেল ফার্মিস গার্ডেনে অবস্থানের খবর পাওযা যায়।

গোলাম রব্বানী বলেন, হোটেল ফার্মিস গার্ডেনে তার কৃতকর্মের বর্ণনা দিয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সত্যতা যাচাই করেন এবং আলোচনার মাধ্যমে আমাদের পাওয়া পরিশোধের জন্য ছামুয়েলকে অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রবাসী ছামুয়েল তার কিছু জিনিসপত্র ফেলে যান। বকেয়া টাকা পরিশোধ করে সেগুলো নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলে তিনি প্রথমে রাজি হন। কিন্তু তিনি আর যোগাযোগ না করায় আমরা থানা পুলিশকে অবগত করি।

আলিনুর ছামুয়েলের এমন প্রতারণার আরও বর্ণনা দিয়ে গোলাম রব্বানী বলেন, ‘ফার্মিস গার্ডেনের বিলও দেননি আলিনুর মোহাম্মদ ছামুয়েল। ইতোপূর্বেও বিভিন্ন হোটেলে এক-দুই মাস করে অবস্থান করে বিল আদায়ের সময় পলায়ন করেছেন। হোটেল সুপ্রিমে তিনি একই কাজ করে ধরা পড়েন এবং প্রায় আড়াই লাখ টাকা বিল প্রদান করে মুক্তি পান।’

সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছামুয়েল টাকা পরিবোধ না করতে নানা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন বলে জানান তিনি। জিরান গেস্ট হাউসের স্বত্বাধিকারী রব্বানি বলেন, ‘ফারমিস গার্ডেন থেকে পলায়নের সময় ছামুয়েল তার পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে গেলে গিয়েছিলেন। আমরা তখন সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে গিয়ে ছামুয়েলের সব বিল পরিশোধ সাপেক্ষে তাকে জিনিসপত্র বুঝিয়ে দিতে বলি। কিন্তু তিনি সমাধানের পথ থেকে বিরত থাকেন।’

আলিনুর ছামুয়েল নিজের অপরাধ গোপন করার জন্য ব্রিটিশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে বানোয়াট গল্প সাজান বলে অভিযোগ এই ব্যবসায়ীর। তিনি বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগ সত্তে¡ও বিদেশি বিবেচনায় আমরা তার সব কাগজপত্র এসএমপির উপকমিশনারকে (ডিসি) সমঝে দেই। এই সহযোগিতাকে আলিনুর মোহাম্মদ ছামুয়েল দুর্বলতা মনে করে নিজের অপরাধ গোপন করতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে গণমাধ্যমকে বিভ্রান্ত করেছেন; যার কোনো ভিত্তি নেই। তিনি আমাদের মানহানির চেষ্টা করেছেন।’

ছামুয়েলের অপপ্রচারে বিভান্ত না হওয়ার জন্য তিনি সবার প্রতি অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে ছামুয়েলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানা।

এসএ/সিলেট