হামাসপ্রধানকে হত্যা, এবার কী যুদ্ধ থামছে

post-title

ছবি সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নতুন প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের বিশাল সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসপ্রধান পরিকল্পিত কোনো অভিযানে নিহত হয়নি, গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহতে একটি ভবনে অভিযানে নিহত হন তিনি।

সিনওয়ার ২০১৭ সাল থেকে গাজায় হামাসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতে, গত ৭ অক্টোবরের হামলার মাস্টারমাইন্ড তথা মূল পরিকল্পনাকারী তিনিই ছিলেন। ওই হামলায় হামাসের বন্দুকধারীরা প্রায় এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করেছিল এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে এসেছিল।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসপ্রধানের হত্যা মানে যুদ্ধের সমাপ্তি নয়। তিনি এটিকে গাজায় বছরব্যাপী যুদ্ধ শেষের সূচনা বলেছেন।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলছে, বুধবার গাজার রাফাহ শহরের একটি ভবনে অভিযান চালানো হয়েছিল। ধারণা করা হয়েছিল যে ওই ভবনটি হামাসের সিনিয়র নেতারা ব্যবহার করেন। সেই অভিযানে তিনজন নিহত হন, সিনওয়ার তাদের মাঝে একজন।

ইসরায়েলি বাহিনী আরও জানায়, ওই স্থানে জিম্মির কোনো চিহ্ন নেই। পূর্বে দাবি করা হয়েছিল যে জিম্মিদের সুরক্ষার স্বার্থে সিনওয়ার ভ্রমণের সময় তাদেরকে নিজের সঙ্গে রাখবে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, তিনজন বন্দুকধারীকে এক ঘর থেকে আরেক ঘরে দৌড়াতে দেখেছে ইসরায়েলি সেনারা। একবার গুলি চালানো হলে তারা বিচ্ছিনি হয়ে যান ও ইয়াহিয়া সিনওয়ার একা ভবনে প্রবেশ করে।

হাগারি আরও বলেন, যে ড্রোন দিয়ে দেখা গেছে সিনওয়ার একটি চেয়ারে বসে আছেন। ইসরায়েলি সেনারা ভবনে প্রবেশ করে নিহত এই হামাসপ্রধানকে একটি ভেস্ট, বন্ধুক ও ৪০ হাজার শেকেলসহ (আট হাজার ২০০ পাউন্ড) দেখতে পায়। 

আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল হার্টজি হালেভি বলেন, আমরা বলেছিলাম আমরা তাকে ধরবো এবং তাকে ধরেছিও। তাকে ছাড়া পৃথিবী এখন ভালো।

ইয়াহিয়া সিনওয়ারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করতে কয়েক ঘণ্টা দেরি হয়েছিল কারণ ইসরায়েল ইয়াহিয়া সিনওয়ারের দাঁতের রেকর্ড ও আঙ্গুলের ছাপ মিলিয়ে দেখছিল। ইসরায়েলের কাছে সিনওয়ারের জেনেটিক ডেটা সংরক্ষিত আছে। কারণ তিনি তার জীবনের কয়েক দশকই কাটিয়েছেন ইসরায়েলের কারাগারে।

এর আগে একবার অনলাইনে কিছু গ্রাফিক চিত্র ছড়িয়ে পড়েছিল। সেখানে দেখা গেছে, সিনওয়ারের মতো দেখতে একটি মৃতদেহ মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে ধ্বংসস্তূপে পড়ে আছে।

আইডিএফ সেই সময় বলেছিল, তাকে হত্যা করা সম্ভব ছিল। কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুসরণ করা একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত না হয়ে বলতে চায়নি।

নেতানিয়াহু সিনিওয়ার হত্যাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, যদিও এটি গাজার যুদ্ধের শেষ নয়, এটা শেষের শুরু। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ আগামীকাল-ই শেষ হতে পারে, যদি হামাস অস্ত্র ফিরিয়ে দেয় এবং গাজায় আটক বাকি জিম্মিদেরকে ফিরিয়ে দেয়।

এর আগে জিম্মিদের পরিবারকে উদ্দেশ্য করে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনার প্রিয়জনকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে পারছি, ইসরায়েল সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়বে। কারণ তারা আমাদেরও প্রিয়জন।

এর আগে, জিম্মিদের পরিবারকে সম্বোধন করে নেতানিয়াহু বলেছিলেন যে ইসরায়েল যতক্ষণ না আমরা আপনার প্রিয়জনকে বাড়িতে না আনছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে চলবে, কারণ তারাও আমাদের প্রিয়জন।

এসএ/সিলেট