বালাগঞ্জে চাচাতো ভাইয়ের হামলায় আহত প্রবাসীর মৃত্যু

post-title

ছবি সংগৃহীত

সিলেটের বালাগঞ্জের চক দৌলতপুর গ্রামে গত শনিবার দুপুরে চাচাতো ভাইয়ের হামলায় গুরুতর আহত প্রবাসী শায়েক মিয়া (৪০) ঘটনার ৩দিন পর মারা গেছেন। মঙ্গলবার রাতে সিলেটের একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় বালাগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর-০৪, তারিখ-১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪। এলাকাবাসী এ ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

বালাগঞ্জ থানা পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বালাগঞ্জের পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়নের চক দৌলতপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানের বাঁশ কাটাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষে ঝগড়া বাধে। একপক্ষে ছুরুক মিয়া ওরফে মিন্টু (৪২) ব্যক্তিগত কাজে কবরস্থানের বাঁশ কেটে নিলে প্রতিপক্ষ তারই আপন চাচাতো ভাই কাতার ফেরত প্রবাসী মোহাম্মদ সাহিদ তালুকদার ওরফে শায়েক মিয়া (৪০) প্রতিবাদ জানান। এ সময় উভয়পক্ষে উত্তেজনা দেখা দিলে একপর্যায়ে ছুরুক মিয়া ওরফে মিন্টু শাবল দিয়ে শায়েক মিয়ার মাথায় আঘাত করেন। ঘটনার পরপর গুরুতর আহত শায়েক মিয়াকে প্রথমে পার্শ্ববতী ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

তারপর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউ সিট খালি না থাকায় পরবর্তীতে তাকে সিলেট উইম্যান্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোহাম্মদ সাহিদ তালুকদার ওরফে শায়েক মিয়া মারা যান।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানাজায় পূর্ব গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. মুজিবুর রহমানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শোকাহত শত শত এলাকাবাসী শরিক হন। জানাজার পূর্বে বক্তৃতাকালে জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী মোহাম্মদ সাহিদ মিয়া ওরফে শায়েক মিয়ার হত্যা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং বিচার দাবী করেন।

জানা গেছে, মোহাম্মদ সাহিদ তালুকদার ওরফে শায়েক মিয়া এলাকায় একজন দানশীল ব্যক্তি হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন কাতার প্রবাসী ছিলেন এবং আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসে যাবার তারিখ নির্ধারিত ছিল। নিহত শায়েক মিয়ার স্ত্রী, ২মেয়ে এবং ১ছেলে সন্তান রয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় নিহত মোহাম্মদ সাহিদ তালুকদার ওরফে শায়েক মিয়ার স্ত্রী শেখ তাহমিনা ফেরদৌস বাদী হয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সুরুক মিয়া (৪২), ছাবিয়া বেগম (৩৫) এবং সুমাইয়া বেগম (২০)-কে আসামী করে বালাগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-০৪। এ বিষয়ে বালাগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ফয়েজ আহমদ ঘটনার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলমের নেতৃত্বে এলাকায় পুলিশী টহল অব্যাহত রয়েছে।

এসএ/সিলেট