প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাবেন ২য়...
সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ১০ম গ্রেডে তারা বেতন...
ছবি সংগৃহীত
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
গত মে ২০২৪ থেকে ৩ দফা দাবি নিয়ে গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, কালোব্যাজ ধারণ, মৌনমিছিল অবস্থান কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসলেও অদ্যাবধি যথাযথ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর ইতিবাচক কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আগামী ১লা জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা,এসময় ক্লাস পরীক্ষা সবকিছু বন্ধ থাকবে বলে জানা যায়।
দীর্ঘ ২ বছর করোনা পরিস্থিতি ও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা ও নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে পিছিয়ে প্রায় ৩ বছর সময়ের দৌরাত্ম্য পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। শাবিপ্রবিতে প্রায় ১ মাস গ্রীষ্মকালীন ও ঈদুল আযহার ছুটি কাটিয়ে ২৩ জুন থেকে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাস পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বন্যা পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরইমধ্যে, বাংলাদেশ শিক্ষক ফেডারেশনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের জেড়ে পহেলা জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এতে নতুন করে সেশনজটের আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা।
সমাজকর্ম বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইবরাহিম সৌরভ বলেন, ক্যাম্পাসে ভর্তির পর থেকেই আমরা নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছি। প্রথমত, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে আমাদের এক বছর শিক্ষা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ে, যদিও অনলাইনে কিছুটা কার্যক্রম চলমান ছিল। এরপর, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ শিক্ষার্থী আন্দোলন এবং সিলেটে কয়েক দফা বন্যার কারণে আরও দুই-আড়াই মাস সময় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এখন সার্বজনীন পেনশন স্কিমের বৈষম্যমূলক নীতি প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষকদের ঘোষিত কর্মবিরতির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি স্থবির হয়ে আছে। এর ফলে, আমরা আবারও সেশনজটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি। এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের সাথে দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানোর জন্য সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি।
খাদ্য প্রকৌশল ও চা প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী জাবের বলেন, চলমান আন্দোলনে আমাদের কিছুটা ক্ষতি হলেও শিক্ষকদের আন্দোলন যৌক্তিক বলে আমি মনে করি। কেননা, আজ শিক্ষকদের সাথে বৈষম্য করা হলে আগামী দিনে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় আসতে চাইবে না। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ক্লাস,পরীক্ষা বিরতি হলে এমনিতেই পড়ালেখায় আগ্রহ কমে যায়, তাই আমাদের শিক্ষার্থীদের দাবি সরকার এববং শিক্ষক সমঝোতায় পৌঁছে আমাদেরকে ক্লাস, পরীক্ষায় ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিন।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান রাতুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ভতির্র শুরুতে গুচ্ছ ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্তহীনতার কারণে আমাদের প্রায় অর্ধবছর সময় নষ্ট হয়েছে। ২০২০ সালে শুরু হওয়া করোনা মহামারীর কারণে আমাদের শিক্ষাজীবন থেকে হারিয়ে গেছে দুটি বছর। দুটি ঈদে ছুটিতে সেমিস্টারের পরীক্ষা যথা সময় হয়নি।পরাপর দুই মাস বন্ধের পরে যখন পরীক্ষা দিতে বসব তখনই শিক্ষকদের কর্মবিরতি। সমস্যা যেমনই হোক সর্বশেষ ভুক্তভোগী আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী। আর এই সমস্যা চলমান থাকলে আমরা তীব্র সেশন জটে আটকে যাবো।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, আসলে আমাদেরও কিছু করার নেই, আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। তিনি আরো বলেন, এটা যে শুধু আমাদের স্বার্থে আন্দোলন তা না, এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের যারা উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানে জড়িত হবে তাদের সবার জন্য। কেননা, শিক্ষায় যদি সুযোগ সুবিধার অবমূল্যায়ন করা হয় তাহলে এই পেশায় কেউ আসতে চাইবেনা। আমরা আশাকরি সরকার আমাদের দাবি মেনে নিয়ে অতিদ্রুত ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরার সুযোগ করে দিবে।
এসএ/সিলেট