তিস্তা-গঙ্গা ইস্যুতে মমতার অভিযোগ ভিত্তিহীন: ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

post-title

ছবি সংগৃহীত

বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা ও গঙ্গার পানি বণ্টন ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখে পানি বিক্রি করতে চাইছে- মমতার এই অভিযোগকে আগেই ‘মিথ্যা দাবি’ বলে আখ্যায়িত করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

আজ শুক্রবার ফের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পানি চুক্তি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘সরকারি তথ্য ও মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগের মধ্যে মিল নেই।’

মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, গঙ্গা চুক্তি নবায়নের বিষয়টির আন্তর্জাতিক পর্যালোচনা হবে। সে জন্য একটি অভ্যন্তরীণ কমিটি গঠিত হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিটি বৈঠকে এই চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সবাই যোগ দিয়েছেন। এমনকি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিও যোগ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল ওই কমিটির বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে তাদের কী পরিমাণ শিল্প ও পানীয় জলের প্রয়োজন, সে কথাও জানানো হয়েছিল। মুখপাত্র জানান, অভ্যন্তরীণ কমিটি তাদের প্রতিবেদন ইতিমধ্যেই পেশ করেছে। আপাতত সেই প্রতিবেদন বিবেচনাধীন।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দেন, ২০২৬ সালে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে। চুক্তিটি নবায়নে উভয় দেশের কারিগরি বিশেষজ্ঞরা আলোচনা শুরু করবেন। একইসঙ্গে তিনি এটাও জানান, তিস্তা উন্নয়ন প্রকল্প সমীক্ষার ব্যাপারে ভারতের একটি কারিগরি দল খুব শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবে।

বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গা কিংবা তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন মমতা ব্যানার্জি। তার বক্তব্য, ফারাক্কা চুক্তির কারণে আমরা ১৯৯৬ সাল থেকে কষ্ট ভোগ করছি। বাংলার পানি বিক্রি দেওয়ার অর্থ হলো, আগামী দিনে গঙ্গার ভাঙন বাড়বে, মানুষের ঘরবাড়ি পানির তলিয়ে যাবে। ফারাক্কায় ড্রেজিং না করার ফলে কলকাতা বন্দরের নাব্যতা কমে গেছে, টান পড়েছে লাখ লাখ মানুষের জীবিকায়। আবার তিস্তার পানি নিয়ে তার অভিমত, তিস্তায় পানি নেই। সেখান থেকে পানি দিলে উত্তরবঙ্গের একাংশের মানুষ আগামী দিনে খাবার পানি পাবে না, বিশাল অংশের মানুষের কৃষি কাজে সমস্যা হবে। অর্থাৎ রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে কোনোভাবেই পানি দেওয়া সম্ভব নয়।

এদিকে গাজার পাশাপাশি হিজবুল্লাহর ঘাঁটি ধ্বংস করতে লেবাননেও হামলা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল সরকার। সম্প্রতি দক্ষিণ লেবাননের বেশ কয়েকটি গ্রামে হামলা চালায় আইডিএফ, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হতেই এবার লেবানন সীমান্তে সেনা জড়ো করছে নেতানিয়াহু সরকার। এর ফলে লেবাননে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে, সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের চিন্তায় রয়েছে ভারত।

আজ শুক্রবারের সাংবাদিক সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, লেবাননে এই মুহূর্তে ২ থেকে ৩ হাজার ভারতীয় রয়েছেন। ভারতের দূতাবাসের তরফে লেবাননে বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গে সমানে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে লেবাননে ভ্রমণ নিয়ে কোনো সতর্কতা বা উপদেশ জারি করা হয়নি। তবে লেবাননে বসবাসকারী ভারতীয়রা যাতে সব সময় ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান রণধীর জয়সোয়াল।



এসএ/সিলেট