প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা পাবেন ২য়...
সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব প্রধান শিক্ষক দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ১০ম গ্রেডে তারা বেতন...
ছবি সংগৃহীত
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অফিসসমূহের অংশগ্রহণে উদ্ভাবনী ধারনার প্রদর্শনী বিষয়ক অনুষ্ঠান “ইনোভেশন শোকেসিং” অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৯ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সিকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের নিচতলায়, ডিসপ্লে সেকশনে এই শোকেসিং অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ইনোভেশন টিম ও ই-গভর্ন্যান্স কমিটির উদ্যোগে “ইনোভেশন শোকেসিং” অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেছেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা।
শোকেসিং অনুষ্ঠানে আরো অংশ নিয়েছেন ভারতের আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. বি এন সাইকিয়া, আসাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ক্লিনিকাল কমপ্লেক্সের পরিচালক প্রফেসর ড. ভুপেন শর্মা, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. ছিদ্দিকুল ইসলামসহ, ডিনবৃন্দ, দপ্তর প্রধানবৃন্দ, বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা), প্রক্টর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ, সিকৃবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীবৃন্দ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেছেন সিকৃবির ইনোভেশন ও ই-গভার্ন্যান্স কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডা. মো. রফিকুল ইসলাম।
সকাল থেকেই দিনব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী আইডিয়া নিয়ে “ইনোভেশন শোকেসিং” অনুষ্ঠান শুরু করে। যদিও শিক্ষার্থীদের স্টল সংখ্যা বেশি তবু বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি দপ্তরকেও তাদের উদ্ভাবনী কর্মকান্ড নিয়ে এই প্রদর্শনীতে অংশ নিতে দেখা গেছে।
দিনব্যাপী এই শোকেসিং এ অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী বিভিন্ন স্টলে ভীর করেছেন। যারা আইডিয়া নিয়ে এসেছেন তাদেরকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। উদ্ভাবনী দলগুলো জানায় তারা এসব আইডিয়া দেশব্যাপি ছড়িয়ে দিতে চায়। স্টল ঘুরে দেখা যায় অনেকগুলো চমকপ্রদ আইডিয়া স্থান পেয়েছে। প্রকাশিত আইডিয়াগুলো যদি বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে কাজে লাগানো যায় তাহলে দেশের চেহারাই বদলে যেতে পারে মন্তব্য করেছেন উপস্থিত দর্শনার্থীরা।
একজন শিক্ষার্থী অ্যাপ্সের মাধ্যমে আবর্জনা বিক্রয় করে সেটি রিসাইক্লিং করে আবার ভার্মিকম্পোস্ট বা কেঁচো সার তৈরির পদ্ধতি নিয়ে এসেছেন। সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভাগুলো এই আইডিয়াটি গ্রহণ করলে একদিকে যেমন ঝকঝকে শহর পাওয়া যাবে অন্যদিকে রাসানিক সারের পরিবর্তে কৃষক পাবে জৈবসার। কেউ এনেছেন স্মার্ট ডাইনিং টেকনোলজি।
ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রি ব্যবস্থাপনার আইডিয়া এবং সোলার পাওয়ার্ড একুয়াফোনিক্স ব্যবহার করে খাদ্য নিরাপত্তার আইডিয়াও স্থান পেয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের কুটির শিল্প, নকশীকাঁথা ও ক্ষুদ্র পর্যায়ের হস্তশিল্প ছড়িয়ে দেয়ার স্টল রয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা অ্যাপ্স ব্যবহার করে কোন মধ্যসত্বভোগী বা মিডলম্যান ছাড়া সরাসরি কিভাবে তাদের পন্য বা ফসল ভোক্তার মাধ্যমে পৌঁছে দেবেন সেরকম একটি ধারনা স্থান পেয়েছে ইনোভেশন শোকেসিং কর্মশালায়। এরকম ধারনাগুলো যদি সরকার বাস্তবায়িত করতে পারে দালালদের দৌড়াত্ব কমবে, বাজারের উচ্চমূল্যও হ্রাস পাবে।
মূলত সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন ও ই-গভার্ন্যান্স টিমের উদ্যোগে এই ইনোভেশন শোকেসিং অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইনোভেশন টিমের ফোকাল পয়েন্ট খলিলুর রহমান ফয়সাল জানিয়েছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে মেধাবী ছেলেমেয়েদের বের করে আনাই এই প্রদর্শনীর প্রধান উদ্দেশ্য।” শ্রেষ্ঠ আইডিয়াগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এছাড়া শোকেসিং শেষে শ্রেষ্ঠ দলগুলোকে পুরস্কার দেয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্কুল কলেজেই এরকম বিজ্ঞান মেলার আয়োজন হয়ে থাকে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চর্চায় বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে।
তবে স্কুল কলেজে না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত এরকম ইনোভেশন শোকেসিং আয়োজিত হলে, তরুণরা বিজ্ঞান চর্চায় আরো আগ্রহী হবে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাংলাদেশেও প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হতে পারে বড় বড় বিজ্ঞানী। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ইনোভেশন শোকেসিং তাই নতুন করে আশার সঞ্চার করলো।
এসএ/সিলেট